swardhwani (5) Flipbook PDF

swardhwani (5)

54 downloads 107 Views 3MB Size

Story Transcript

সম্পাদকীয়– শাশ্বত এক কথা, প্রেম। প্রেম নিয়ে লিখতে গেলে এক উথাল পাথাল মন উঠে আসে। প্রেম ভালবাসার অনুভূতির জন্য কোন বয়সের বাঁধ বাঁধা নেই। প্রেম-ভালোবাসাই তো এই জগতকে বেঁধে আছে। এই প্রকৃ তি ফু ল রঙ আকাশ পাখি নদী সাগর–এই সবেই আমরা মোহিত হই। আর সেই প্রকৃ তির মোহনা ঘিরে সৃজিত হয়ে চলে প্রেম।

ভালো না লাগলে ভালোবাসা আসে না। মন না চাইলে মনের মিলন ঘটে না। ভালো লাগতে গেলে সুন্দর মনমাতানো একটা

পরিবেশের দরকার হয়। এ ব্যাপারে সব চেয়ে বেশি

প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে পুরুষ ও নারী। এই বিপরীতগামী নারী পুরুষ দেহ পরিকল্পনায় বিধাতার কারিগরী সৃষ্টিকে বাহবা না দিয়ে পারা যায় না। এটা যেন এক আকর্ষণীয় সৃষ্ট চু ম্বকীয় পরিসর। সৃষ্টি স্থিতির চলমান দুটি দিক–নর ও নারী। এরা যখন পজিটিভ হয় স্পষ্ট হয় তৃ তীয় সত্ত্বা। সে সব আবার ভালোলাগার অন্য পথে গড়িয়ে যাবার কাহিনী। কৈশোর-যৌবনের প্রেম সাধারণত নিষ্কাম হয়। পুরুষ নারী একে অন্যের প্রতি আকর্ষিত হয় আর স্থান-কাল-পাত্র সুলভে তাদের পরস্পরকে ভালো লাগে আর সেই ভালোলাগা সময় ও সুযোগে ভালোবাসায় পরিণত হয়। এই ভালোবাসার নামান্তর বুঝি প্রেম–না কি প্রেম ভালবাসার গভীরতাকে বলে?...'সখি, ভালোবাসা কারে কয়–সে কি কেবলই যাতনাময়? তোমরা যে বলো দিবস রজনী, ভালোবাসা ভালোবাসা… সুখ দুঃখ যেমন জীবনকে জড়িয়ে থাকে ঠিক তেমনি প্রেমর ক্ষেত্রে বিরহও সত্য। কৈশোর যৌবনের ভালোলাগার প্রেমের মধ্যে নিষ্কাম ভাবনা ভরা থাকে। আর এই কারণেই বুঝি প্রেম ভাবনা পবিত্রময় হয়ে ওঠে। প্রেম আসলে একটা বন্ধন, আবার এ বন্ধন আরো দৃঢ় হয় বিবাহবন্ধনে। কিন্তু বিবাহিত প্রেম আবার কিছু টা অন্য রকম। এ ধরণের প্রেম উপসর্গের মধ্যে কিছু টা বৈষম্য ঢু কে যায়। সেখানে সকাম বা দৈহিক প্রেম ঢু কে পড়ে। প্রেম বাঁধা পড়ে সংসারে তথা ঘরে, তখন প্রেমের সঙ্গে ঘরের বন্ধন হয় আরও সুদঢ়ৃ । ঘর বাঁধলে বহির প্রেমের ক্ষেত্রে অলিখিত একটা নিষেধাজ্ঞা চিহ্নিত হয়ে যায়। তখন গৃহী বা গৃহিণী তোমারাই হও স্বামী বা স্ত্রী, সংসার সীমারেখায় বাঁধা প্রেমিক বা প্রেমিকা। কখনো ঘরের প্রেম ঠিক ভাবে দানা না বাঁধলে এক ব্যতিক্রমী প্রেমের সূচনা হয়, তার নাম পরকীয়া। পরকীয়া বৈধ্য নয়, একে ঘর ভাঙার খেলা বললে ভু ল হবে না। প্রেমের ক্ষেত্রে নারী হয় ঘরমুখী, নিজের ঘর সংসারকে সে ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরে থাকে। পুরুষের কাছে কখনো কখনো ঘর সংসার এক ঘেয়ে বলে মনে হয়। প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তিতে পুরুষ এগিয়ে থাকে, এ ব্যাপারে স্ত্রীপক্ষ বড় ধৈর্যশিলা।

প্রেম ও প্রকৃ তির সম্পর্ক বড় নিবিড়। লিয়নের তলে নাচের ঠমকায় হারিয়ে যাওয়ার হাতছানি আসতেই পারে, তবে প্রেম সার্থক সেখানেই যেখানে বিশ্বাস ও অন্তরতম ভালোবাসা থেকে যায়। মনে প্রশ্ন জাগে– প্রেম ভালবাসা কি আমরা সেখানেই ফেলে আসি যেখানে কিছু স্মৃতির প্রেমিক-প্রেমিকা বিরহের জাল বুনে রাখে ! নৈসর্গিক সে বিরহী ভালোবাসা যেন নকশী কাঁথার মাঝেই বোনা থাকে আমাদের মন। স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা মধুর তবে তাকে টিকিয়ে রাখতে হলে উভয়কে কিছু টা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আসলে প্রেম ছাড়া সুশংৃ খল মনুষ্য জীবন সম্ভব নয়, প্রেমহীন জগতের কথা আমরা ভাবতে পারি না। প্রেম-ভালোবাসার সত্যমন্ত্রেই তো আমরা বেঁচে আছি, নতু বা এই পৃথিবী অচিরেই হয়ে যেত মনপ্রাণশূন্য অরাজক ও বিধ্বংসী।… তু মি ছুঁ য়ে দিলে আমি আরও কিছু দিন বাঁচতে পারি… এই প্রকৃ তি আমায় নিঃসর্গ ভালবাসা শিখায়। তোমায় দেখবো বলে আমাদের চারপাশ জেগে ওঠে। পৃথিবীর সবচেয়ে অবহেলিত এক নায়কের জন্যও প্রেম রাখা থাকে। অনাম সে নারী অবশেষ নায়িকা। আমি আছি, তাই সে আছে–পৃথিবীর সমস্ত মরীচিকা পেরিয়ে হেঁ টে চলে প্রেমিক প্রেমিকা– শত শতাব্দীর লৌহ কপাট সময়কে বাঁধতে পারেনি অনন্তকাল ধরে সেই অজর অমর নায়ক নায়িকা পৃথিবীর ধূসর পথ মাড়িয়ে এগিয়ে চলে…এগিয়ে চলে… যাক অনেক ক্যাচাল হল। আমাদের এবারের প্রেম বিষয়ক সংখ্যাটি সবাইকে পড়ে দেখতে অনুরোধ রইলো। নিবেদনইতি– তাপসকিরণ রায়।

সম্পাদকীয়– শীতের জড়তার পর ডালে ডালে আগুন জ্বেলে আনন্দের হিল্লোল নিয়ে রক্তিম পলাশের রঙে রাঙিয়ে দিয়ে এলো বসন্ত। চৈতি বেলায় সেই বসন্তও তো এখন যাই যাই করছে,দহন বেলার ছোঁয়ায় শেষ বসন্তের সর্বনাশা মোহময় মায়াবী আলোর পরবর্তী দিনগুলি যে আরো নিঃস্ব আর রিক্ততার অনুভূতি নিয়ে আসে। ঝরাপাতার এই বেলা যে বড়োই বেদনার! বড়ো একাকীত্বের অনুভূতি নিয়ে আসে। হৃদয়ের অন্তঃস্তল থেকে বিষাদের করুণ রাগিনী কখনো গান হয়ে কখনো কবিতা হয়ে উৎসারিত হয়। বাষ্পাকুল চোখে বেদনাদীর্ণ হৃদয়ের বিমূর্ত বেদনা মূর্ত হয়ে ওঠে গানে ,কবিতায়।–সাবিত্রী দাস।

সম্পাদকীয়– সুপারফাস্ট ট্রেনের মতো দিন কেটে যাচ্ছে।এই সবে একটা শীতকাল আর বিশ্বজোড়া happy new year,বইমেলা,আর ফু রফু রে ঠাণ্ডা হাওয়া,আর পলক না পড়তেই আবার এসে যাচ্ছে পয়লা বৈশাখ। বাঙালির নরম অনুভূতির ২৫ এ বৈশাখের প্রস্তুতি নিয়ে।তবে,"এ বড়ো সুখের সময় নয়", আমরা খুব একটা স্বস্তিতে নেই। আনন্দে নেই। আমরা যারা আদর্শ সম্বল করে বড়ো হলাম তাদের প্রতিনিয়ত আহত করছে সময়।চারিদিকে সীমাহীন নীতিহীনতা আর পথভ্রষ্ট রাজনীতির নাক গলানো চলেছে।অনেক কষ্টের অর্জি ত স্বাধীনতা আর শত শত শহীদের রক্ত আজ নয়ানজুলির পাঁকে। এই বিবমিষাময় সময়ে আমরা আশ্রয় পেতে আসি সৃজন সাহিত্যে। আনন-কেতাবে আজকাল হাজার হাজার কবিতার ভিড়। মাঝে মাঝে মনে হয় "এত কবি কেন"। বানান ভু ল,পুরোনো

শব্দ ও বদ্ধ জলার মতো অনুকরণের লেখা নয়। কবিতা লিখতে গেলে ন্যুনতম পড়াশুনা করতে হয়,মাত্রা,ছন্দ ও বানান সম্পর্কে জ্ঞান,নিজেকে আজকের রচনা সম্পর্কে আপডেটেড হতে হবে। তারপর নিজস্ব ভঙ্গীতে লিপিবদ্ধ করতে হবে অনুভব। কবিতা সময়ের দলিল বটে।মননের প্রতিবিম্ব কবিতা। কবিতার পথ দুর্গম।চটজলদি খ্যাতি কাব্য রচনার গতিরোধ করে।তবু আমরা অভ্যাসে লিখি। কবিতা আমাদের বেঁচে থাকার রসদ।–জয়িতা ভট্টাচার্য।

সূচিপত্র — তৈমুর খান – (১) যাত্রা (২) সাধনা (৩) নদী পেরিয়ে যেতে হবে (৪) খাঁচার ফাঁক দিয়ে যতটু কু দেখা যায় (৫) অন্তর্জীবী কৌশিক গাঙ্গুলীর কবিতা–১ বৃষ্টি ২ বেঁচে আছি ভালবাসায় যন্ত্রণায় ৩ চিঠি ৪ অনুরাগ/

কৌস্তব দে সরকারের কবিতা–১ অদ্ভু ত ২ মেনে নিতেই হয় জারা সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা– ১ কৌশল ২ প্রহর শ্যামাপ্রসাদ সরকারের কবিতা ১ সানগ্লাস ২ অভীপ্সা রানী সেনের কবিতা–বালি ঝড় অদিতি ঘটক–বাংলা আমার সাবিত্রী দাসের কবিতা– নিভৃ ত অবকাশে শৈবাল কর্মকারের কবিতা–সুদেষ্ণা, তু মি অন্য রূপে অশোক কুমার দত্তর গুৎস্য কবিতা– ১ জননী তোমাকে ২ ছায়া লিপি ৩ ভাষা ৪ অশ্রুদিনের কবিতা ৫ কবিতা দিবসের কাব্য ৬ অভাজন ৭ অনন্যা ৮ বীজ তপন কুমার মুখার্জি র কবিতা– ১ না শুধু না ২ বিশ্ব কবিতা দিবস ৩ অবসরে রেবাতীরে ৪ যুগ যুগান্তর থেকে ধ্যানমগ্ন হে রুদ্র! ৫ মনটা আজ বড়ই বিষন্ন হে ! ৬ দিকভ্রান্ত অগ্নিশ্বর সরকার–অতীত শংকর ব্রহ্মের এক ডজন কবিতা – ১ ছন্দ মহে ২ প্রতিকুল স্রোতে ৩ অপেক্ষায় ৪ পাগলী ৫ আত্মহারা ৬ ধাক্কা মারুন ৭ বুঝে নিতে হবে ৮ স্বপ্নকথা ৯ অপার বিশ্বাস ১০ নীলিমা এসেছে ১১ তাদের একজন ১২ মায়ার জগত শান্তা মিত্রের কবিতা – এক প্রেম দুই বার্ধক্যে প্রেম আনন্দ গোপাল গরাই – খুজে ঁ ফিরি তারে নিরাপদ বিশ্বাসের কবিতা– ১ খুজি ঁ সেই রাত ২ অধরা ৩ বিষন্ন তীর ৪ কবিতা পাঠের আসর বিউটি কর্মকার – উৎসর্গ ডাক্তার সুভাষ চন্দ্র সরকারের কবিতা– ১ বসন্ত পঞ্চমী বলে গেল ২ বসন্ত এখনো কাঁদে ৩ শহীদ স্মরণে

তাপসী ব্যানার্জীর কবিতা – তু মি আর আমি বাসুদেব সরকারের একগুচ্ছ অণুকবিতা– ১ আলাপ ২ মুগ্ধ ৩ সাঁতার ৪ যুগল মিলন বিধাত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা–ভালোবাসা সজল চক্রবর্তীর কবিতা–উত্তর মালা আজও খুজে ঁ পাইনি মহাসিজ মন্ডলের কবিতা–প্রেম মহা আকমাল হোসেনের কবিতা–মিথ্যে মনীষা করের কবিতা–মৃত্যুদণ্ড জয়িতা ভট্টাচার্যের কবিতা–অথবা প্রতিশোধ ডাক্তার তাপস কুমার সরকারের কবিতা–বৃষ্টি আজও পড়ে প্রসেনজিৎ মন্ডীর কবিতা– ১ স্বপ্ন জাগাবো ২ দুঃস্বপ্ন কৃ ষ্ণকলির কবিতা–দুঃখ পোড়ায় সুখ রানা জামানের কবিতা– তু মি আমার ভ্যালেন্টাইন মধুরিমা ব্যানার্জীর কবিতা–প্রেম স্বীকৃ তি স্মৃতি শেখর মিত্রের কবিতা– ১ কেউ জানে না ২ সঞ্চয় উত্তম চক্রবর্তীর কবিতা– ১ এবার আমিও ২ আমায় দোষ দিও না ৩ সে যে তু মি ৪ অবিচার সান্ত্বনা চ্যাটার্জি র কবিতা–১ ফিরে দেখা ২ সত্ত্বা ৩ ছাই ডাক্তার অরুণ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা–অষ্টাদশী ছোঁয়ায় জেবুননেসা হেলেনের কবিতা– ১ সলতে পোড়ে ২ সংকীর্ণ ৩ জনপদ ৩ বারো মাসে বছর ৪ টক টক ৫ গল্প বলা

ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা–অন্ধকার অজিত কুমার জানার কবিতা–সরল সূত্র বীরেন্দ্রনাথ মন্ডলের কবিতা– ১ ডাকে সাড়া ২ অদৃশ্যে প্রেরণা বড়ালের কবিতা– ১ স্মৃতি ২ অপেক্ষা পারভেজুল ইসলামের কবিতা–জীবন তরী দেব কুমার মুখোপাধ্যায়ের কবিতা–আলো ছায়ার মেয়ে পাপুম মজুমদারের কবিতা–হৃদয়পুরে শাশ্বত বোসের কবিতা–তবু লিখি দর্পনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা–১ দক্ষিণের দরজা ২ রঙিন খামে শিখা মানিকের কবিতা–হলুদ মাখা পাঞ্জাবী ফটিক চৌধুরীর কবিতা–প্রেম ১ প্রেম ২ শমিত কর্মকারের কবিতা–একটি ভালবাসা সন্ধ্যা রায়ের কবিতা– ১ আক্ষেপ ২ অজানায় তাপসকিরণ রায়ের কবিতা– প্রেমিকা আমার !

পাঁচটি কবিতা তৈমুর খান ১ যাত্রা --------

পাওয়া না-পাওয়ার মাঝখান দিয়ে চলে যাচ্ছি সপ্তর্ষির আলো এসে পড়ছে পথে যতটু কু দেখা যায় পথ আলো-আঁধারের রহস্যে ঘেরা মৃত আবেগের চর, ম্লান সন্ধ্যাবেলা জীবনকাহিনির সংরাগ

যেতে যেতে দু-একটা রঙিন হাত আর হাতের আঙু ল ঁ র যদিও সিদ ু পরা কপাল, এলোমেলো খোঁপা যদিও চপ্পল নেই পায়ে, অলৌকিক মৃদু রমণীরা

আদিম প্রজ্ঞার ভার বয়ে নিয়ে যাই আমাদের মৃত্যুর কাছে পৌঁছাতে হবে বলে আজ আর কোনও পিছু টান নেই নিজেকে বড় নির্ভ ার লাগে…

২ সাধনা ---------হৃদয় খাতায় বাক্য ও শব্দেরা শুয়ে আছে এত দীর্ঘশ্বাসের পর কাকে জাগাব আজ?

মাথার ওপর মেঘেরা জমেছে বাগানে ময়ূর নেই,বাগান ঘিরে রেখেছে সমাজ

কোলন আর সেমিকোলনে কিছু টা বিশ্রাম মাঝে মাঝে যদিও বসেছে ড্যাস বিকল্প কমার কাছে বিবৃতির বিন্যাস সমূহ শূন্যতা নিয়ে উদাসীন চেয়ে রইলাম

সব নিবেদন পুড়ে গেলে স্বপ্নেরা বসবে কোথায়? দাঁড়ি টেনে টেনে সব সহজিয়া বোধ বাউলের ঘরকন্নায় ডু বে যায় একে একে সম্মোহন সাজায় নির্বোধ…

৩ নদী পেরিয়ে যেতে হবে ------------------------------বেঁচে থেকে কেবলই পিপাসা পায় যত হাঁটি তত পথ রাত্রি কাটিয়ে আবার রাত্রি, সকাল সকাল চলা শুরু হয়

বিবাহের হলুদ ফু ল কবেই ঝরে গেছে মেহেদি পাতার রং ফিকে হয়ে গেল এখন উভয়েই নেকড়ের মতো এ-বন সে-বন ঘুরে চলে এসেছি বহুদূর বনে

মাঝে মাঝে কামড়ানো স্বভাব যুদ্ধের মহড়ায় কলঙ্কিত জ্যোৎস্নার প্রান্তর ঘরবাঁধা ঘর হাহাকার করে ওঠে ছেলে-মেয়ে সবাই বিষাদ

শুধু মনে মনে ছবি এঁকে টাঙাই নদী পেরিয়ে যেতে হবে, এই মহাকালের নদী ঢেউ ভেঙে ভেঙে সাঁতার আমাদের…

৪ খাঁচার ফাঁক দিয়ে যতটু কু দেখা যায় ----------------------------------------------তোমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল হঠাৎ এই দেখার ভেতর আকাঙ্ক্ষারা জেগে উঠল আবার

আবার চাঁদ, আবার আলো আবার সূর্যের ভাষা পেতে চাইল মন

তোমরা সবাই মেঘমালা ভেসে ভেসে বহুদূর যেতে পারো আমরা গার্হ স্থ্য খাঁচায় পোষা পাখি খাঁচার ফাঁক দিয়ে যতটু কু দেখা যায় ততটু কু দেখি

তবুও জলের ছাঁট আসে,বিদ্যুতের ঝলকানি তবুও বসন্ত বাতাসে পত্রপল্লবের কানাকানি কেউ কেউ ভ্রমর, শুধুই ডানার কম্পন শুনি স্বপ্ন এসে তাঁত বোনে,স্বপ্নে ডু বে যায় অধরা কাহিনি!

৫ অন্তর্জীবী --------------কোথাও কোথাও ব্যথা থেকে যায় বলা হয় না কিছু ই শুধু ফিরে আসতে হয় সবই তো জলের কাহিনি, নৌকা অথবা ডিঙি বেয়ে পারে আসতে চাই;সম্পর্কে র সাঁকো কে বানাবে? অথচ হৃদয় আছে, হৃদয়ের বাগানে ফু ল ফোটে

যে ফু লে পূজা হয় অথবা তোমার জন্য মালা হতে চায়।

আজও কি আর দাঁড়াতে পারি তোমার দরজায়? অথচ মন এসে তোমাকে দেখে যায় মনে মনে ভাঙা মন ফিরে এসে আজও কল্পনার নকশি কাঁথা বোনে!

কৌশিক গাঙ্গুলির কাবিতা— ১

বৃষ্টি' গুঁড়ো গুঁড়ো বৃষ্টি ঝরছে মনে শেষ দেখার স্মৃতি এখনও অম্লান হয়ে তারপর একদিন চাকরির সন্ধানে আমি , তু মি খুজ ঁ তে চলেছো সংসার ,

এরপর হঠাৎ এক কালবৈশাখী সব ওলট - পালট । আজকাল আর ভাবতে চাইনা কিছু , তবু গুঁড়ো গুঁড়ো বৃষ্টি ঝরছে মনে আজও সেই বেকার বাউন্ডুলে আপনমনে কবিতা লিখে চলি , পাখিরা যেমন আকাশ নিয়ে ওড়ে নদীর জল ছলাৎছল নতু ন যেন সুর , তোমার ছবি ভু লতে পারি নাগো গুঁড়ো গুঁড়ো বৃষ্টি ঝরছে মনে আজও সেই বেকার বাউন্ডুলে আপনমনে কবিতা লিখে চলি ।

২ বেঁচে আছি ভালোবাসায় যন্ত্রণায় ----------------------------------বসে থাকা এই বিষন্ন দুপুরে তোমার চোখের জলের লেখা যে চিঠি খানি পেলাম তাতে হৃদয় উপচানো যন্ত্রণার ভালোবাসা বহে যাচ্ছে সারা অন্তর জুড়ে। দেখো ওই কাশফু লের জঙ্গলের মাঝে আমি শুয়ে আছি। তবু আকাশের মেঘ তোমার যে চিঠি খানি আমাকে দিল তার মধ্যে মিষ্টি একটা সুর ভেসে আছে। বলছে আমরা বেঁচে আছি ভালোবাসায়,যন্ত্রণায়।

৩ 'চিঠি '

সমুদ্রের ঢেউ বাধা দিওনা আমায় পাখনা মেলেছি অনেক যন্ত্রণায় , হাসতে শিখেছি তোমার মুখের দিকে চেয়ে একটা চিঠি লিখেছিলাম সেটা ফেলেছি হারিয়ে , গোপন স্রোতে পা ফেলতে পাই ভয় , সমুদ্রের মতন ভালবাসে স্বপ্নের মেয়ে আমায় . দিয়ে সবটু কু প্রীতি লিখো চিঠি.... হারাবোনা চোরাস্রোতে আমি যাবো ভাল হয়ে এক অজানা অসুখ থেকে -

৪ "অনুরাগ"

কে কার থেকে বেশি বোঝে কে কার থেকে? কাজ খোঁজে, কে চন্দ্র সূর্য তারাকে ইশারায় ডাকে, কে ভালোবাসায় স্বার্থের গন্ধ রাখে । তবু আমি তার কথা বলে যাব বারবার তবু নতু ন ঠিকানায় চিঠি দেবো হারাবার, তবু শূন্যতায় ধরে থাকবো তার হাত তবু ভাগ্যের পাশা খেলায় হবো না মাত। নাইবা আসলে তু মি সময় মতো নাইবা পাশে থাকলে অবিরতো, নাইবা গান গাইলে বিশুদ্ধ বেহাগ নাইবা তৈরি হলো তোমার আমার অনুরাগ।

কৌস্তুভ দে সরকারের কবিতা — ১ অদ্ভু ত কুসুমের বুক থেকে উড়ে যাচ্ছে দানের সাব্বাশ থেকে উড়ে যাচ্ছে পাখি পাখি মন হচ্ছে একি নিছাবর

অবাধ্য চোখের নিচ থেকে কথা বলারা ঝরছে বুকের বাসাটি ভাঙছে নীলাচ্ছল শিশু উরিব্বাস একি হচ্ছে মাঝভর্তি বৃহত্তর কিছু কিছু কি হচ্ছে দুলে উঠছে ফু লে উঠছে মুগ্ধতার পিছু

২ মেনে নিতেই হয়

সময় এক বিরাট প্রশ্নচিহ্ন। যখন কেউ বলে, 'সময়ে সব হয়', সেকথার সত্য বা মিথ্যা বিচার্য বিষয় নয়। সময়কে দোষারোপ করে সাময়িক কষ্ট লাঘব করা কিংবা কিছু টা সুখ হয়তো পাওয়া যায়; কিন্তু যখন বৃষ্টির ফলক তাকে মনে করিয়ে দেয়; সাগরের ঢেউ তাকে স্মরণ করায়; ঝর্ণার জল দেখলে তাকে মনে পড়ে, কিংবা প্রতি বছরের শিউলির ঝরে পড়া...; তাহলে কি, প্রেম বা অপ্রেমে ভেতরের ধ্বংসস্তূ প বা কুঁ ড়ি ফু টবার ক্ষণই সময়? এসব চিন্তা-চেতনা অনেকের কাছেই ছেঁ দো মনে হবে। তবু, মন এমন একটা জায়গায় অবস্থান করে, যাকে আমি ভয় পাই, যাকে আমি সুখ বা স্মৃতির সাথে মেলাতে পারিনা। আমার অস্তিত্বের ভেতর একঝাঁক মৌমাছি ঢু কে নিরিবিলি থাকাটাও তছনছ করে দেয়।

বস্তুতঃ এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে সময়ের পা পড়েনি বা তার মুখ দেখা যায়নি। আমি তাকে কখনো বলিনি, "এখানে তোমার কোনো গুরুত্ব নেই!" আর তাই সময়ের হাত বারবার করে যায় দুঃসহ আঘাত; কারোর জন্য, কোনকিছু র জন্যই তার দাঁড়ানোর তর সয়না আর।

জারা সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় ১ কৌশল ক্লান্ত দুপুর ঝু প করে পড়লে তাকে আপ্যায়নে এগিয়ে দিই স্নানজল অনন্ত বিরহ সামলাতে প্রয়োজন শব্দ। বিশ্রামাগারে সজীব গাছ রেখে তাকে শোনাতে থাকি জীবনস্রোতের গল্প সূত্রে ভু ল হলে অপচয় হয় অনেকটা অথচ সময় কখনো থেমে থাকেনা মৃত্যুপ্রহর গোনা দুপুর ঘুমিয়ে পড়লে স্বপ্নে শেখাই পাখিজন্ম ও বাসা তৈরির কৌশল।। ২ প্রহর

আরও কিছু পার হলে দরজায় ঝু লবে অপেক্ষা প্রাত্যহিকী সাজানো টেবিলে শূন্যতার জলছাপ পেয়াদা ক্যামেরা বন্দী করবে সময়। এ পোড়া শহরে আসেনি বসন্ত আয়নায় কেবল দগদগে প্রতিচ্ছবি কুবোপাখীর অহংকার ও উদাসীনতা এ সকল পাহাড় সমান ব্যর্থতা পেরিয়ে কোনো অনামা দুপুরে চৈতি মেয়ের আঁচল খসে পড়লে,প্রকট হয় বাম বুকের তিল তারপর, তিন প্রহরে বিল দেখার গল্প।।

............... শ‍ ্যামাপ্রসাদ সরকারের কবিতা– ১ সানগ্লাস আজকাল চোখে সানগ্লাস দিলে তোমাকে খুব অন‍ ্যরকম লাগে। দেখায় গতিময়ী, সপ্রতিভ আর স্মার্ট সব অফিসের কাজে যেমনটা চায়। আমি সানগ্লাস পরিনি অনেকদিন আর, এখন অপদস্থ হতে হতে প্রতিদিন একান্তে, ক্ষয়ে যেতে যেতে কৌপীনটু কু বাঁচাতে চাইছি! রাস্তায় প্রতিভাবান সতেজ আলোক রশ্মিরা আর তোমার চোখ এসে ছোঁয়না কতদিন! আমি তবু তোমাকে রোজ দেখি গিলে খেতে খেতে,

যেভাবে চোখের দিকে শুভদৃষ্টির সময় অপলকে চেয়ে থাকতে হয় নিয়ম মেনে, ঠিক সেইভাবে কালো চশমার আড়ালেও এখনো তোমায় দেখি। অকারণ দেখি। আসলে অনেকগুলো বেলা কেটে যাচ্ছে, অচল সমীরণে তাল কাটছে দ্বিধার স্পর্শ, তার সাথেও কেটে যাচ্ছে আসঙ্গের স্পর্ধাটু কুও। তবু জানি তু মি সদর্প ভঙ্গীর আড়ালে কিন্তু, চোখ থেকে সেই সানগ্লাসটা খুলতে ভয় পাচ্ছ, আমি জানি ওর আড়ালে লুকিয়ে রেখেছ, মুঠো মুঠো অজস্র ইলেকট্রন কণা। যাকে একদিন আমিও অশ্রু বলেই ঠিক চিনতাম।

২… অভীপ্সা ............ কথা দাও আলো না জ্বালালেও তু মি কড়া নাড়বে এসে.... অযথা বিভ্রমের পর এনে দেবে শীতল ব‍ ্রহ্মান্ডের জলটু কু, শয়নের পর নামিয়ে দেবে অঙ্গীকার। আমায় আকাশ দেখিয়ে প্রিয় মানবী, তারপরেই না হয় চলে যেতে বলো... তখন অশরীরি মেঘের মত, প্রতিটি বিন্দুতে ধরে রাখব স্নেহ আর অফু রান আদরযাপন.... ডাক দিয়ে যেও কলমীলতায় স্পর্শ করে দিও বনতু লসীর ঘ্রাণ। ........

বালি ঝড় / রানী সেন অনেক দিন হলো তু মি চলে গেছো নিরুদ্দেশের পথে। কেমন আছো এখন তু মি? আমিতো জানিনা কেউ আছে কিনা তোমার সাথে। তু মিতো পারতেনা একা থাকতে, তোমার অসহায় লাগতো। এখনো কি তেমনই লাগে তোমার! নাকি নিজেকে পাল্টে ফেলেছো একেবারে, অ-নে-ক দিন দেখা হয়নি আমাদের, আমাকে কি কখনোই মনে পড়েনা তোমার? জানো যেখানে আমরা দাঁড়াতাম, সেই অজস্র ফু ল আর গন্ধ ছড়ানো ঝাপড়া বকুল গাছটা আর নেই! নির্দ য় মানুষেরা ওকে টু করো টু করো করে কেটে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ওর জন্য মাঝে মাঝে ভীষণ কষ্ট হয় আমার। জানো!আমরা যেখানে ফু চকা খেতাম,

সেই ফু চকাওয়ালা দাদা এখনো ওখানেই বসে। আমি আর ফু চকা খাইনা এখন, ফু চকাওয়ালা দাদাকে আমি এড়িয়েই চলি, পাছে তোমার কথা জিজ্ঞেস করে। এই! মনে পরে তোমার সেবার বাসন্তী পুজোর মেলায়! কি বৃষ্টি! কি বৃষ্টি! দুজনে ভিজে একেবারে ঝু প্পুস! কোনরকমে বাড়ি ফিরেছি। তারপর আমার পনেরো দিন ধুম জ্বর। ডাক্তার কাকু দেখে বললো এযে টাইফয়েড, মেয়াদি জ্বর। বিছানায় থাকতে হবে বেশ কয়েকদিন। তবে তু মি ভালোই ছিলে। তখনতো মোবাইল ছিলনা যে টু ক করে কথা বলবে, এর ওর কাছ থেকে উড়ো খবর নিতে। বাড়িতে আসার মতো সাহসতো নেই তখন। তাই সুস্থতার জন্য ঠাকুরের 'থানে' মাথা ঠু কে প্রার্থনা করতে পাগলের মতো। তু মি কি এখনো ঘন্টার পর ঘন্টা রাতের আকাশ দেখো? আচ্ছা তোমার কি এসব কথা মনে আছে? সেবার দোলের সময়? প্রথম রাঙিয়ে দিলে আমায়। সেদিন থেকেইতো পুরো পৃথিবীটা একেবারে রঙিন হয়ে গেলো আমার ! আমার সব মনে আছে, লিখতে গেলে এক পৃথিবী হয়ে যাবে। তারপর হঠাৎ করে কিইযে হলো! আচমকা একদিন উড়ে এলো সেই বালিঝড় চারদিক অন্ধকার করে উড়িয়ে নিয়ে গেল সব অনেক দূরে! অনেক অনেক দূরে! তবুও আজও আমি বসে আছি তোমার অপেক্ষায়....

বাংলা আমার অদিতি ঘটক বাংলা আমার মায়ের ভাষা,আমার প্রাণের আরাম বাংলা আমার চিরচেনা সুললিত, সোঁদা সুঘ্রাণ বাংলা আমার মাঠ,ঘাট আর নদী স্নেহলতা বাংলা আমার ঘাস,ফল,ফু ল গাছে ছাওয়া শ্যামল বারতা বাংলা আমার ভাওয়াইয়া, বাউল ভাটিয়ালি, কীর্ত ন বাংলা আমার দোয়েল,ফিঙে কোয়েল ডাহুক,বাবুইয়ের নির্ত ন তবুও বাংলা আমার প্রতিবাদী স্বর শানিত তরবার অন্যায় অবিচারে আপোষহীন নির্ভীক সংগ্রামী ঝড় বাংলা আমার রক্তে রাঙানো বীর শহীদের পুন্য ভূ মি বাংলা আমার রুধির স্নাত সেই মর্যাদাময়ী তাইতো দিকে দিকে একুশের জয়গান বাংলা পেরেছে বিশ্বদরবারে ছিনিয়ে আনতে সকল মাতৃ ভাষার

সাবিত্রি দাসের কাবিতা – নিভৃ ত অবকাশে নিভৃ ত অবকাশ জুড়ে সন্ধ্যা নামে পৃথিবীর বুকে, নির্লিপ্ত মন ভাবলেশহীন শ্যাওলা হয়ে মেতে ওঠে প্রবৃত্তির উৎসবে, মেতে ওঠে কামনার ঘ্রাণে জটিল উপপাদ্যের অসমাপ্ত সমীকরণের মতো। পায়রার বুকের মতো কবোষ্ণ রাত বাসর সাজাতে চায় আদিম আহ্লাদে। রাত বাড়ে কোজাগরী চাঁদের আলোয়, শরীরী স্থাপত্য জুড়ে শুধুই বিভ্রম! ছটফট করে মরে প্রেম হৃদয়ের বধ্যভূ মিতে রিণিঝিণি বেজে যায় রক্তের স্রোতে।

সুদেষ্ণা, তু মি অন্য রূপে শৈবাল কর্মকার সুদেষ্ণা, তোমাকে যতবার আমার মনের ক্যানভাসে কল্পনার তু লি দিয়ে আঁকি ততবার নতু ন করে প্রেমের কবিতা লিখি, সুদেষ্ণা, তোমার কোমরের ভাঁজগুলি খেই পথে ইতিহাসের পাতায় স্নানের পর চু ল ঝরা জল নদী হয়ে বয়ে চলতো মাংসল খরস্রোতের গায়, পার হতাম ভালোবাসার এক নিঃস্তব্ধ জলপ্রপাত ! সুদেষ্ণা, তোমার শরীরে এখন আধুনিকতার ছাপ ডায়েটিং এ শীতের শীর্ণ দেহ , বর্ষায় উপচে পড়া ক্লিভেজ ; রাতের অন্ধকারে তারাদের আলোয় তোমার চোখে স্পষ্ট হয়ে ওঠে প্রেমের নিঃসঙ্গতার ক্লেশ ; সুদেষ্ণা, আমি এখনও তোমাকে খুজে ঁ বেড়াই নতু ন ছন্দের উদ্ভাবনী পুরাতন প্রেমের কবিতায় সুদেষ্ণা, তু মি এখন অন্য রূপে নাম দিয়েছি অঙ্গনা, কখনো বা ডাকি সুদর্শনা পুরাতন সাজে নতু ন করে ঢালি ভালোবাসা

দুই চোখ বুজে খুলি হৃদয়ের জানালা।

অশোক কুমার দত্তর গুচ্ছ কবিতা– ১ জননী তোমাকে মেঘে মেঘে ভাষা শহীদের বেলা গড়িয়ে যায় মন্দাক্রান্তা বিকেলের দিকে! আমি এই অনন্ত বিকেল থেকে বিমূর্ত কুয়াশা সরিয়ে নিয়ে অন্যমনে দুঃখ লালন করি! বিষণ্ণতাকে ঘিরে তখন উড়তে থাকে ইউক্যালিপটাসের ফু ল... তাঁর অফু রান মায়াবী ছায়া! তবু ভয় হয় - - শহীদের আলো জ্বালালে যদি সর্বনাশ ফিরে আসে ধামাকায়! মরসুমি স্তাবক বর্ষা যদি ডু বে যায় গ্লিসারিনের অশ্রুজলে? তোমার আনত কপোল বেয়ে নেমে আসে অফু রান কান্না! হে অবিনশ্বর ভাষা জননী... তোমার ভালোবাসার রহস্যময় অন্ধকারে কবিতার এই কৃ ত্রিম অক্ষরবাগানে আমি আর কক্ষনো ফিরবো না! ২ ছায়ালিপি ডানায় ডানায় মেলা পরিশ্রান্ত দুপুর খুলে দিল ম্লান রোডের জানালা । একটু পরে রজনীগন্ধার স্তবক নিয়ে উজ্জ্বল বিকেল আসবে হেলতে দুলতে! বলবে -- নিভৃ তে নিরানন্দ সনে বর্ণ সাজাও মনে মনে

এই পরাজিত ভাষা দিবসে! কবিতার অমলিন বর্ণমালা সাধক আসার আগে নিশ্চু প হয়ে একা একা রফিক আজাদের পোশাক পরে ঘুরে বেড়ায় যেন সন্ধ্যার নির্জ ন বালুচরে! ৩ ভাষা তবু এই উন্মাদনায় কি ক্লান্ত লাগে আজ ! নিত্য দিনের পরাজয় থেকে উঠে একদিনের জয়দ্রথ হয়ে উঠি । পায়জামা পাঞ্জাবি সাজে বাঙালি হয়ে উঠে একদিনের সভায় তোমার ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে বসি ! বুঝি না কেন আমার ই বিমূঢ় প্রগলভতা য় । রক্তে ভেজা একুশে ফেব্রুয়ারি মেঘনা গঙ্গায় অশ্রু ভেজা ভেজা হয়ে নীরবে ভেসে যায় !

৪ অশ্রুদিনের কবিতা অথচ -তু মিতো বলেছিলে সোনালী রোদ আবির হয়ে ফিরে আসুক কবিতার খাতায় --আমার কবিতা কোনো দুঃখী একা মানুষ আপন ভেবে মগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুক গোধূলির একলা বারান্দায়? তবুও এসব প্রথম যৌবনের স্মৃতি! উদ্দাম নদীতে নৌকার গলুই এ বাজানো ভাঙা বাঁশির সুর! আজও ডাকে প্রলুব্ধ মায়ায়! রুদ্ধ দরজার ওধারে -- তু মি আছো সেই দূর ভিনদেশে! বলো না তু মি -নিদাঘ - ভোরের সেই সোনাঝরা রোদ আজও পড়ে কী মৃত গোলাপের উদ্ভিন্ন পাতায়?

৫ কবিতা দিবসের কাব্য

অবিনশ্বর চিতার মতো শুয়ে আছি নিদাঘের রোদে -নশ্বর দেহের উপর খেলে যাচ্ছে লাজুক হাওয়া! বেমিসাল সময়ে কেউ গাইছে অস্তগামী বিকেলের ইমনকল্যান ধীরে ধীরে মুছে ফেলছি জীবনের সব মৃদু কলতান! হে প্ৰিয় জীবন আমার কী কোথাও যাওয়ার কথা ছিল? হলো না হায় শুধু তোমার কাছেই যাওয়া! ৬ অভাজন সীমাহীন নৈশব্দ্যের মধ্যে ডু বে যাচ্ছে সময়ের কলধ্বনি ! মেধাবী অশ্রুসজল চোখ গুলি রাজপথে জ্বলে পুড়ে খাক ! নিরুত্তাপ জনগণ বারবার খুলে দেখছে ম্যাজিক বাক্স খানি কোন নতু ন আলিবাবা এসে বলবে চিচিং ফাক চিচিঙ্ফাক ? ৭ অনন্যা প্রতিটি কবিতার ভেতরে লুকিয়ে থাকে কবির জন্মকথা ! বৃক্ষের গুঁড়িতে যেমন বয়সের ভাঁজ সেভাবেই কবির কৈশোর যৌবন ছোটো ছোটো সুখ দুঃখ কান্না আর ভালোবাসার ব্যথা ! জীবনের প্রথম পরীক্ষায় রাতজাগা কিশোরের সঙ্গে স্বপ্ন বিহ্বল মা । কলেজ ইউনিভার্সিটিতে তিন বছরের বড় দিদি আর বান্ধবীরা । যৌবনে ভালোবাসার স্ত্রী আর তারপরে একজন এই বয়সে সোনামণি কন্যারা । বৃক্ষকে ঘিরে উঠে চলেছে গুল্ম বা লতা । আমি পিতৃ তান্ত্রিক বা মাতৃ তান্ত্রিক ব্যবস্থা বুঝি না ! শুধু বুঝি আমাকে ঘিরে থাকা এইসব প্রিয় পরিজন তারা নারী ! নারী তু মি ! নারী তু মি অনন্যা। ৮ বীজ

রোদ্দুরের প্রচ্ছায়ায় বেড়ে ওঠে আনন্দ ফু লের ঘ্রাণ । প্রাসাদে প্রাসাদে কারাবন্দি রেখেছি বৃষ্টি রাজকন্যার প্রাণ । তবে কি মেঘ বালিকারা করেছে মন খারাপের বাড়ী ? ভরা শাওনের দিনে কিভাবে স্পর্শ করবো আমি বৃষ্টির ফু লঝু রি ?

তপন কুমার মুখার্জীর কবিতা –

১ না ,শুধু না না হে ,শুধু না ,জীবন ভোর শুনে এসেছি ,শুধু না । তাই এখন আর " না"- এই আপাতঃ বিশ্রী না কে আমার আর অতটা খারাপ মনে হয় না লাগেও না । অনেক দেখছি,দেখব , থেকে অনেক ভাল " না" । না নিয়ে জীবন কেটে যায় শৈশব থেকে অনেকের মনের মত খেলনা ,খাবার,পোষাকে পিতার "না " রূঢ় কিন্ত তাঁর অস্বচ্ছলতার বেদনা ঢাকা সেই না সময়ের সাথে গেছে মুছে,আজ বুঝি তাঁর যন্ত্রণা । শিক্ষার ডিগ্রির পশরা থাকলেও, চাকুরীদাতার--না, বেকার প্রেমিকের প্রস্তাবে প্রেমিকার পিতার -- না , লেখকের কাছে প্রকাশকের "না"- কতশত না শোনা পরিপক্ক কান ,অভ্যাসের বশে কোন কষ্টই পায় না। না ,অনেক রঙ্গীন আশার আলো দূর করা এই না , অমৃতের চেয়ে ও মিষ্টি সে , অনেকে তা জানে না । শিরদাঁড়া বিক্রির প্রস্তাবে - না,আদর্শ বিক্রিতে না এরকম কিছু "না " আর সেটা বলার শিক্ষা জানা এখনও হয় নি দুর্লভ যদিও আজ তারা হাতেগোণা , তাই ভালবাসি না কে ,ঘরে যার নিত্য আনাগোণা । এজন্য আমি আর কোন" হ্যাঁ" র স্বপ্ন দেখি না হে , জেনেছি আমার ইচ্ছা অনেকের মত স্বীকৃ ত হবে না তাই আর কোন স্বপ্ন নয়, নয় কোন মোহময়ী আশা নৈরাশ্য আর ভাঙে না আমাকে, সাহস জোগায় " না" র ভেলা য় বসি হাঁসি ,বিদ্রুপ করি হ্যাঁ - কে বিস্মিত অবাক সে , পরাজিত আমার সহ্য শক্তিতে নির্বাক ক্রন্দন করে ,মাথা খোঁড়ে দারুন লজ্জায় ।



বিশ্ব কবিতা দিবস

যে দিকে তাকাই কেজো লোকে ভরে আছে এই ধরা ধাম, খেতে ও খামারে যারা ঝরায় ঘাম, অনলস শ্রম করে অবিরাম , মেহনতী ওই শ্রমিক, কিষাণ কত সৈনিক দেয় সীমান্তে প্রাণ , রাজা বলে ,ওরা সব মহীয়ান ওদেরই বলে রাজপাট চলে , দুনিয়া অচল ওরা না হলে তারই মাঝে আছে সভা কবিগণ নৈবেদ্যে রয় কদলী যেমন ! তারা শুধু করে শব্দের চাষ কল্পনা জগতে করে বসবাস আকাশের পারে বা গভীর সাগরে যেতে তারা চায় মনের গভীরে গান বাঁধে আর ছড়া কাটে সুখে কাব্য খোঁজে তারা মানুষের দুখে সৃষ্টিছাড়া মানুষ যে তারা,কবি যারে বলে লোকে ! কবে কোন ক্রৌঞ্চ নিহত বাণে তে আদি কবিতা লেখা সেই দুঃখেতে রাজা রাজড়ার যুদ্ধ ও প্রেমেতে অমর কাব্য রচিত হয়েছে জগতে কবি চলে সেথা, রবি যেথা নারে পঁহুচিতে মানুষের দুঃখে ,শোকে প্রেমে ও আবেগে সৃষ্টির আনন্দে কবি ,কত রাত জাগে , ছন্দের মিল খোঁজা -কি সে যে গুরুভার, পাঠকে বুঝিবে সে কি দুঃখ তাহার , তবু আনন্দ লহরীর মাঝে, কবি মনে মনে ভাসে , পাগল বলে লোকে তারে ,মুখ টিপে টিপে হাসে !

আজ এই বিশ্ব কবি দিবসে তে , প্রণত বিশ্ব শ্রদ্ধার সাথে -ভাটিয়ালী আর বাউলের গানে শ্যামা সঙ্গীত আর কীর্ত নে , বেদ ও বাইবেল কুরানে পুরাণে দেখ কত কাব্য সুষমা ছড়ানো সেখানে , "ভূ মার " সে আনন্দ বারি- পান করি সাধু জনে কবি --মহান সে ই সৃষ্টির মাঝে , মানুষের যত মহান কৃ তী এ জগতে কবি তার রয় অগ্রভাগে তে পুষ্প মহান সুগন্ধে তার ,কবিও সেই পুষ্পের দলে জগতের রথ যারা টেনে চলে , কবিরই রচিত গানের সুরে তে শক্তি লাভ করে আপন দেহে তে কবি জানে এ পুরস্কার- অমূল্য এই জীবনে তাহার, এর জুড়ি মেলা ভার - কবি তাই প্রণম্য সবার বিশ্ব কবিতা দিবসে - সকল কবিরে করি নমস্কার ।।

৩ অবসরে রেবাতীরে এস বন্ধু , নৈমিত্তিক ঘোড়দৌড় ছেড়ে একটু অবসর খুজি ঁ , একটু গভীর শ্বাস নিই, উপল ব্যথিত গতিতে বয়ে চলে শিব স্বেদ পুষ্ট নির্মল কায়া নর্মদা তীরে । ওই দূরে পাহাড়ের গা ঘেঁষে ,যেখানে তির্যক রেখায় আপনার গতি ভিন্ন পথে প্রবাহিত করে ,উছ্বল জলধারা তার সহসা ব্যাপ্তি চায় বিস্তৃত বপুতে । এস তার তীরে এসে বসি ,ফাল্গুনী দিনের অপরান্হ বেলায়, অস্তগামী রবি আছে প্রতীক্ষায়

ওই দৃরে শিমুল পলাশের লালিমা মেখে গায় ইতস্ততঃ ছড়ানো আদিবাসী গ্রামের সীমানায় অজানা সঙ্গীতের সুর আসে ভাসি হাওয়ায় সুশীতল মলয় বাতাসের স্পর্শ সুখ মাখি এস বসি ,নিভৃ ত নদী তীরে ঘন বৃক্ষশাখের ছায়ায় । এস বন্ধু রেবা তীরে - জনহীন আরণ্যক গন্ধে যেখানে অশান্ত প্রাণ আপনার স্বস্তি খোঁজে বিস্তৃত নীলিমায় প্রকৃ তির উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে । দুরন্ত সময় হঠাৎ স্থবির এই দৃশ্য পটে,সহসা নিশ্চল এখানে শূন্যে বিলীন জীবনের যত কোলাহল এস এই নীরব নদীতীরে নিজেরে হারায়ে খুজি ঁ অজানা আনন্দের আস্বাদনে হোক জীবন সফল ।। ৪ যুগ যুগান্ত থেকে ধ্যান মগ্ন হে রুদ্র ! নিরন্তর নিঃশেষ করে ভোগতৃ ষ্ণা এই পৃথিবীর। কোন সে অমরত্ব এষণা দেব ও দানব- করেনিত্য প্রার্থনা । স্বল্পে তু ষ্ট মহাদেব ! অপার বিস্ময় হৃদয়ে আমার ।অশান্ত পৃথিবী র যত হলাহল--কণ্ঠে ধরি সুতীব্র যাতণা , নির্বাক নির্লিপ্ত আদিকাল হতে ।ভৈরব মাভৈ মন্ত্র জপে নিশিদিন! সৃষ্টি আর ধ্বংসের মহান মিলনে--তান্ডব ছন্দায়িত ভোলার চরণে! যার নামে নেশাগ্রস্ত বিশ্ব চরাচর তু মি তারে জানিবে কেমনে

হে উন্মাদ সন্ন্যাসী । তারক মন্ত্র শুনেছ কি কানে? যার লাগি কর উপাসনা ছড়ায়ে সে প্রতি কণে কণে জীবনের প্রতি ছন্দে ক্রীড়া রত বিভূ ।চোখ মেলে দেখ একবার । সাধ্য কি তোমার শুধু এক নিশা মূয্টি ভর তন্ডুল আর বিল্বপত্রে সেবিবে তাঁহারে! বিশ্ব জুড়ে অকৃ পন কৃ পা দেখ না কি তু মি ! শুধু প্রেম এই কাম্য তাঁর । ৫ মনটা আজ বড়ই বিষণ্ণ হে! হঠাত্ পাওয়া কোন এক খবরে! গীতা জ্ঞান , অপারক লাগাম কষে ,মন কে ফেরাতে চেনা রাস্তার ছকে! অনেক পড়েছি আমি হারাবার ভয়,তবু ছাড়ে না পোড়া মন। জানি মৃত্যু চির স্থির জানি ছেড়ে যেতে হবে নীড়, তবু এত ভয়? অনেক সংশয়ে ঘেরা মন । পায় না খুজে ঁ পথ, মায়ার চক্র ব্যূহ থেকে বাহিরে যাবার । অনেক দেখেছি - ক্ষু ধা অসময় মৃত্যু ,শোকার্ত বিধবার হাহাকার । বিমূঢ় চিত্তে ভীত মনে ডেকে গেছি অদৃশ্য ঈশ্বরে ।

কতবার পায় নি যে সাড়া তাঁর, বিক্ষু ব্ধ হৃদয়ে করেছি অস্বীকার , দৈবী সত্ত্বার । হায় রে মানব মন ,তবু বারে বারে শক্তি খোঁজে তাঁহার স্মরণে । ৬ দিগভ্রান্ত পথিক তু মি কি হারাইয়াছ পথ? এই এক কঠিন প্রশ্ন - সময়ের মুখে ! মনে হয়, হয় তো ভু লেছি পথ । গন্তব্যে পৌঁছাতে ভু ল পথ ধরে দিশাহীন , বিব্রত, ক্লান্ত ,হতোদ্যম শ্রান্ত পথিক । সভ্যতার নিদারুণ ব্যর্থতায়, হতবাক বিশ্ব ,নিষ্ফল প্রচেষ্টায় মলে হাত । কোথায় হয়েছে ভু ল! ত্রুটি র সন্ধান নিরর্থক-- এই সন্ধিক্ষণে । সভ্যতার মানদণ্ড যেথা- মৃত্যুর হাতিয়ার, নিরন্তর খোঁজে ।কত দ্রুত সহস্র প্রাণ যে পারে কাড়িতে- সে ই শক্তিমান! ধর্ম, অর্থ, মোক্ষ,কাম -- শাস্ত্র বাণী , পরিত্যক্ত । বাহুবলে অর্থ বলীয়ান-কৌলিন্যের দাবি করে ।নতমুখ শ্রম শূদ্র বেশে ধনের সেবক শুধু । অসহায় সহে অবিচার । পথিক হারায়েছে পথ- সরল সত্য তাহা, করিতে স্বীকার-- পায় না সাহস । পৌরুষের ব্যর্থ অহঙ্কারে--- পরাভবে তবু করে অস্বীকার ।

অতীত অগ্নিশ্বর সরকার

হয়তো কোনো জ্যোৎস্নাভেজা রাতে কোনো পর্ণকুটীরের ধারে, করেছিলাম প্রেমযাপন, বেহুলার ধারেই শুরু দিনযাপন।

হয়তো ক্লান্ত যুদ্ধ শেষে রাজদণ্ড হাতে ফিরেছিলাম তোমার কাছে, রক্তাক্ত শরীরে এঁকে দিয়েছিলে অজস্র চু ম্বন তিলক।

হয়ত এই নদী তীরেভিড়েছিল কোনো বাণিজ্যতরী, চু রি যাওয়া সূর্যের আলোতে তোমার প্রেমে মজেছিলাম।

হয়তো লখিন্দরে বেশে ভেলায় ভেসে গিয়েছিলাম, বেহুলার রূপে তু মি তখন

করেছিলে প্রাণের আবাহন।

শংকর ব্রহ্মর একডজন কবিতা -------------------------------------১).

ছন্দ মোহে ------------

কবিতা কবিতা করে কেটে যায় দিন মাস বছর বছর, শব্দের পিছনে ছোটা ছন্দময় তবু তাতে কাটে না যে ঘোর। চোখের সামনে ঘোরে কত পরী সুন্দরী, (না দেখে তাদের) সেই দিকে দিস না নজর। চু ল পাকে দাঁড়ি পাকে

বুদ্ধি তবু পাকে না যে তোর, চারিদিকে ধান্দা এত,তু ই কিছু কর তবু তোর কাটে না যে কবিতার ঘোর। সামনে জীবন দেখ বয়ে যায় নদীর মতোন, ধূসর মন্থর বেলা নেমে আসে বুকে প্রেম জাগে কি তখন? ছন্দ মোহে জীবনে যে কেটে যায় তোর।

২). প্রতিকূল স্রোতে -------------------

আমরা আর সংগ্রাম করি না সংগ্রামের ভাব-ভঙ্গি করি হাসি-কাঁদি , নাচি-কুঁ দি , বাঁদর নাচাই কোনটাই যথার্থ নয় , ঠিক যেন যন্ত্র-মানুষ। ভয়াবহ অভিজ্ঞতাগুলো

এখন আর তেমন রোমাঞ্চকর নয় ফাঁপা এক মানুষের ভিতর আসল মানুষটা ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে। কোন জ্ঞানীর কাছে ,শান্তির ছায়া খুজে ঁ পাই না কেবল নৈঃশব্দ ,কানে বাজে মৃত্যুর গুঞ্জন যে দুর্ভ োগ আমরাই সৃষ্টি করেছি একদিন মৃত্যুঞ্জয়ী আলো থেকে অন্ধকারে এসে। কবি লিখছেন যাদের জন্য, তারা পড়ছে না শিল্পি আঁকছেন যাদের জীবন ভাষ্য তারা অক্ষম তার ভাষা বুঝতে, নাকি সব শিল্প-কলা বোবা কালা অন্ধরাই বোঝে? এ এক আশ্চর্য সময় (যন্ত্র-মানুষ ভরে যাচ্ছে দেশে) অন্তর্বতী চোরা স্রোতে খড়-কুটো সামনে ধাবমান এখন জরুরী খুবই নিজেকে প্রলুব্ধ করা প্রতিকূল সময়ের স্রোতে।

৩). অপেক্ষায় ------------

পোষ মানাতে না পারলেই বুকের আগল ভেঙে ভালবাসা ছু টে যায় দিক বিদিকে আপোষহীন দুঃখের কাছে কবিরাই সর্বদা ছু টে আসে সন্ধ্যায় আপোষ করতে। আর খরস্রোতা নদীর বুকে অন্ধকার ঝুঁ কে পড়ে ঠোঁট রাখে নির্দি ধায়, অহংকারে বুকে তার ঢেউ ওঠে।

মনে পড়ে যৌবনের সন্ধিক্ষণে কাউকে বলেছিলাম ভালবাসি অথচ হৃদয় খুলে তাকে দেখাতে পারিনি ভালবাসা তৎক্ষণাৎ লোডশেডিংয়ে সারা পাড়া জুড়ে নেমে এসেছিল অন্ধকার। সে রমণী অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল, ফিরে আসেনি আর আমি অপেক্ষায় ছিলাম,আজও অপেক্ষায়

৪). পাগলি --------

পাগলী আমায় "ভালবাসা" বলে ডাকে জানি না মেয়েটি,কোথায় লুকিয়ে থাকে? মাঝে মাঝে এসে স্বপ্নের ফাঁকে মনে যে আমার কত না স্বপ্ন আঁকে। যখন তখন দেখি নাকি আমি তাকে? সে আমায় শুধু চিন্তায় ফেলে রাখে। কখনও রাত্রি দুপুরে,হঠাৎ সে কাছে আসে ঘোরলাগা মনে কি সুরে, যাই আমি কোথা ভেসে। গভীর আবেশে সেও ভাসে সাথে, চাঁদ তারা নিয়ে,গভীর নিশিথে দেখে তারা চাঁদ মিটিমিটি হাসে হৃদয়ে আমার মুখখানি তার ভাসে তবু আমরা দু'জনে থেকে যাই দূরবাসে। পাগলী আমায় হয়তো বা ভালবাসে? জানতে চাইলে মিঠিমিঠি চোখে হাসে। পাগলী আমায় "ভালবাসা" নামে ডাকে,

জানি সে আমার, হৃদয়ে লুকিয়ে থাকে।

৫). আত্মহারা ------------

মন যখন স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে তখন আর দরকার হয় না কোন কথা বলা, তার আগে যত কথার কারিগরি ভালবাসাকে চটকে তিতো করে ফেলা। তোমার ইচ্ছে যখন আমার ইচ্ছে হয়ে ওঠে তখন আর কোন আলাদা ইচ্ছে অনিচ্ছাই থাকে না আমার, হচ্ছে তো দেখছি তাই,তোমার মুখের কথাই এখন আমার প্রাণের কথা তোমার খুশিই আমার খুশি হয়ে গেছে, তোমার কষ্ট আমার কষ্ট তোমার আনন্দে আত্মহারা হই আমি, এরই নাম ভালবাসা বুঝি? জানি না বুঝি না কিছু , মনে প্রাণে আত্মহারা হই।

৬). ধাক্কা মারুন --------------

এই যে হৃদয় এইখানে আজ বাস করে এক দুঃখি মানুষ , নেই তার মান নেই তার হুশ আছে কেবল থাকার মধ্যে নিঃস্ব হৃদয় , সেখানে রাখছে লিখে মনের সকল গোপন ভয়। অন্য সবার দুঃখ ব্যথায় হৃদয় যে তার জর্জ রিত তবু সে নয় তো ভীত এই সমাজের নিঃস্ব যারা তাদের মতো ভবিষ্যতে কি হবে তার কিংবা তাদের , এসব কথা ভাবতে বসে হৃদয় কাঁদে। তবু চোখে আসে না জল জ্বলে মনে তীব্র আগুন সবাইকে সে ডেকে বলে এবার সবাই একটু জাগুন , একটু না হয় রেগে আগুন হয়ে এই সমাজের অবিচার আর অত্যাচারের বন্ধ দ্বারে সজোরে এক ধাক্কা মারুন। ৭). বুঝে নিতে হবে -----------------

নেই ভাবতে নেই,নেই ভাবলে ফাঁকা ফাঁকা লাগে, মনে কর আছে ধারে কাছে কয়েকটি নক্ষত্র ছড়িয়ে, কিংবা আকাশের বুকে ভেসে আছে চাঁদ ইচ্ছে হলে ভাব সেও আছে ধারে কাছে যাকে তু মি গভীর গোপন টানে মনে প্রাণে চাও। নেই ভাবতে নেই, নেই ভাবলে উর্বর জমিতে ঢু কে পড়ে নোনা জল বরং ভাব,সারা মাঠে সোনার ফসল ভরে আছে গাছে গাছে ফু টে আছে ফু ল বিলকুল ভরে আছে সবই,যেখানে থাকার কথা যা যা।

তোমার একান্ত যা চাই সবই আছে মজুত ভান্ডারে প্রয়োজনে তোমাকে তা বুঝে নিতে হবে।

৮) স্বপ্নকথা ----------

তোমায় নিয়ে ঘুরতে যাব পাহাড় থেকে নদী তু মি নিম রাজী হও যদি মুখ তু লে আর দেখব না যে পূর্ণিমার ওই চাঁদ তোমায় ছাড়া সব দেখা আজ বাদ। ঘুম না এলে পরে, মুখটা তু লে ধরে কপালে দিয়ে ছোট্ট একটা চু মো বলব,এবার ঘুমোও। তু মি রাজী হও যদি তোমায় নিয়ে ঘুরতে যাব পাহাড় থেকে নদী যদিও কোথাও যাইনি অদ্যাবধি, তোমায় নিয়ে স্বপ্নে ভাসি তোমায় ভেবে একলা হাসি হাসতে হাসতে পরবো ফাঁসি তাতে কার বা কি? আমি তোমায় স্বপ্নে শুধু কাছে টেনেনি। ৯). অপার বিশ্বাস ----------------

আমার অনন্ত তৃ ষ্ণা ভালবাসা নামক সত্তায়

অগস্তের মতো এক সমুদ্র প্রেম শুষে নিতে চায়, সে তৃ ষ্ণা মেটাতে নারী পারে না যে হায়, তারই জন্য মরুভূ মি হয়ে আছে,বুকের উর্বরা সঞ্চয়, ভালবাসা হয়েছে বিলীন আমার গোপন সত্তায়। যে মানুষ ভালবেসে ব্যর্থ হয়,সেও জানে ভালবাসা কি? আমি তাই সাব্যস্থ করেছি,খাব না আর ভালবাসার ঘি। তোমাকে ছাড়া বেঁচে আছি ঠিকই,না বাঁচার মতো আর কত ব্যথা,মরতে পারি না তাই বাঁচা, অথচ বাঁচতে চাই না বলে মরা,অতোটা সহজ নয় বলে, তোমাকে ছাড়াই কেমন চলছে সংসার, বিস্ময়ের শেষ নেই আর,ভালবাসা বিস্ময় অপার।

১০). নীলিমা এসেছে ------------------

নীলিমা এসেছে ঘরে, তাকে আজ কোথায় বসাব? ভূ মধ্যে এখন রোদ, বাতাসের হা-হুতাশ ধ্বনি, খরতাপে আকাশ উজ্জ্বল প্রান্তরের সবুজ প্রবাহ পুড়ে ছাই ফু টেছে কৃ ষ্ণচূ ড়া, গাছ জুড়ে দাউ দাউ আগুনের শিখা, আতু র গন্ধ তার, এবার এসেছে তার সাথে এসো এসো উজ্জ্বল শিমূল, গ্রীষ্মের তীব্রদাহে এসো নীলিমা এসেছে ঘরে, তার সাথে পরিচয় হবে, নীলিমা এসেছে ঘরে,

তাকে আজ কোথায় বসাবো? নীলিমাকে ভালবেসে বুকের গভীরে তাকে পেতে গিয়ে দেখি হায় হায় এ কি? নীলিমা হারিয়ে যায় দূরে তবু কেন ভালবাসা বেঁচে থাকে বুকের ভিতরে?

১১). তাদের একজন --------------

নীতিবোধ ব্যাপারটা,আসলে খুব গোলমেলে যদি কেউ সারাদিন আকাশের দিকে মুখ তু লে তাকিয়ে থাকতে চায়, আমার আপত্তি হবে কেন? কিংবা কেউ যদি তার সোহাগী বৌকে, অন্যের গলায় ঝু লিয়ে দিতে চায় আমার কি বলার থাকতে পারে ? কেবল আমার গলায় ঝু লিয়ে না দিলেই হল। কোন সুন্দরীর দিকে,যদি কেউ তাকিয়ে থেকে চোখ ব্যথা করে ফেলে, তা'তে আমার কি? শুধুমাত্র আমার প্রেয়শীর দিকে ওভাবে কেউ না তাকালেই হল। কিন্তু কেউ যদি নিরন্ন মূর্খ জনগনকে ফু টবল ভেবে ক্রমাগত লাথি মেরে মেরে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়,

তাহলে আমার আপত্তি ভীষণ কারণ,আমি যে তাদেরই একজন। ----------১২) মায়ার জগৎ ---------------

তু মিই আমার মিষ্টি সোনা, তু মিই আমার মন তোমার উপর রাগ করে আর থাকব কতক্ষণ? সুজন আছে অনেক আমার, মিষ্টিসোনা এক মনকে বলি, মিষ্টিসোনার দিকেই শুধু দেখ। অনেক মায়ায় গড়েছি এই সোনার সংসার, তু মি আমি ছাড়া সেথায় কেউ থাকে না আর। একটি শিশুর মুখ উঁকি দেয় হঠাৎ অপলক, তোমার ভিতর পৌঁছে গেলেই সুখের স্বর্গলোক। বাতাস জানে সে সব কথা,

আকাশ শুনে হাসে হাস্নুহানার গন্ধ এসে বসে আমার পাশে, আমি তাকে তোমার কাছে পাঠিয়ে দিতে পারি, হাস্নু শুনে, বিশ্রি ভাবে হাসতে থাকে ভারী। তোমার ভিতর মায়ার জগৎ থাকে বিলক্ষণ সকল সময় সেইখানে যে থাকে আমার মন। তোমার দিকে বিশ্ব জগৎ তাকায় অনিমেষ একটি নতু ন মুখ উঁকি দেয় হঠাৎ কেমন বেশ। --------

শান্তা মিত্রের কবিতা – ১ প্রেম কৈশোরের প্রেম সে তো নিছকই আবেগ নিয়ে সাময়িক ভালোলাগা।

পরস্পর কে কাছে পাওয়ার জন্য

নতু ন কাউকে ভালো লেগে তাকে নতু নভাবে চেনা ও জানার নাম হলো প্রেম। একে অপরের বুকে মাথা দেওয়ার সাথে চলে মন দেওয়া নেওয়ার পালা। দে দোল দোলে ভেসে থেকে হাতে হাত রেখে দুজনে দুজনের স্বপ্নে হারিয়ে যাওয়া। প্রেম হলো পাশাপাশি কাছাকাছি বসে থেকে জড়িয়ে থাকার নাম।

একে অপরের প্রশংসায় ভেসে পরস্পরের চোখে হারিয়ে যাওয়ার নাম। লোক চোখের আড়াল থেকে সব কিছু থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলা অপর নাম প্রেম। দেখা হওয়া কথা বলার জন্য তড়পানি থেকে হয় কষ্ট আসে চোখের জল। কথায় কথায় সন্দেহ থেকে হয় অনেক অশান্তি আর মারামারি। হাত ধরাধরি করে হাসি মুখে ভালোবেসে চলো পালিয়ে যাই এ এক অদ্ভু ত প্রেমের কাহিনী।

কথায় কথায় খুনশুটি থেকে ঝগড়া অশান্তি এটাই যে এর পরিণাম সব শেষে হয় বিচ্ছেদের মতো চরম পরিণতি।

২ বার্ধক্যে প্রেম

বার্ধক্য প্রেম ... এ তো অনেক জটিল এক পরিনত মনের অদম্য ইচ্ছের বিকাশ। সংসার আর পরিজন বাঁচিয়ে রেখে অন্য কাউকে আড়ালে রেখে দূর থেকে তাকে ভালোবাসার আর ভালো রাখার প্রচেষ্টা। বয়সের শেষে এসে মনের কোণে জমা জর্জ রিত কালো যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার নাম প্রেম। প্রেমের নতু ন জোয়ার মনে জাগায় অপার আনন্দের এক দারুন অনুভুতি। নতু ন করে মনে জাগে এক অপার গভীর ভালবাসার স্বপ্নের ঘনঘটা। মন আনচান করে সারাক্ষণ তারে একটু ছোঁয়া একটু দরশনের অভিলাষা।

একটু খানি খুশির পরশ পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা চলে মনের গভীর অন্তরালে। তার একটু খানি ঝলক তার একটু খানি বলনে মনে আসে অধিক প্রশান্তি। ছু টে চলে যেতে চায় মন কারো বাধা না মেনে। এতেই যে মন পায় এক বাঁধনহারা শান্তি। সবকিছু র ভয় জটিলতা কে হার মানিয়েও তার টানে এগিয়ে যাওয়ার নাম বোধহয় প্রেম। দূর থেকে মনে প্রানে ভালোবেসে জড়িয়ে রেখে আদরে আহ্লাদে ভরে ওঠে আবেগি এই মন।

খুজে ঁ ফিরি তারে আনন্দ গোপাল গরাই

মুখোমুখি কোনদিন হয়নিকো দেখা বসেনিকো পাশে কোনদিন, হাত ধরাধরি করে চলিনিকো কোনদিন পথে; রাখিনিকো চোখে চোখ নিরালায় বসে। একবারই দেখেছিলাম তারে স্বপনে আমার একবার---- শুধু একবার! একদিন গোধূলিবেলায়--বসেছিলাম পার্কে র কোণে দেখছিলাম শিশুদের খেলা শুনছিলাম কোলাহল শুনছিলাম পাখিদের ডাক যুগলের প্রেমালাপ বৃদ্ধবৃদ্ধাদের স্মৃতিচারণ তখনই---- ঠিক তখনই পার্কে র সবুজ ঘাসের কার্পেটে পদচিহ্ন এঁকে

এসেছিল কাছে আমার হাতে ছিল রজনীগন্ধার স্তবক। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলেছিল সে-এই নাও আমার উপহার। অনন্ত বিষ্ময় নিয়ে শুধালাম আমি--- কে তু মি? কেন দিলে ফু ল? বললো সে--- ভালোবাসি তোমায় এ আমার প্রেমের উপহার! কী নামে ডাকব বল? -- যেমনি বলতে গেলাম কথা ভেঙে গেল ঘুম রজনীগন্ধার গন্ধে ভরে গেল ঘর স্বপ্নপ্রিয়ার প্রেম রয়ে গেল অমলিন আকাশের গায়।

নিরপদ বিশ্বাসের কবিতা– ১ খুজি ঁ সেই রাত __________ রাতের আকাশে জোছনাকে খুজে ঁ ছি অনেকবার' অন্ধকারে ঢাকা! কেবল তারারা জেগে থাকে মিটিমিটি দিব্যি। অনেক রাতে চাঁদ ওঠেজোছনা ছড়ায়' আমি তখন ঘুমের দেশে-এমনই করে অনেক রাত কাটে, আসলে জোছনা না থাকলে রাতের আকাশ ভালো লাগেনা; তাই খুজি ঁ তাকে। আমি এমন একটি জোছনা রাত খুজি ঁ '-----যেখানে সারা পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে, জোছনা হাসে তারারা হাসে অবাধ, অম্লান। আমি একবার দেখেছিলাম এমনই এক জ্যোৎস্না রাত'

কৈশোরে'-ফাল্গুনী পূর্ণিমায়; সে রাতে জোছনা ছড়ায়ে ছিল -দিগন্ত জুড়ে; খালে, বিলে, নদী জলে, -দূর দূর পাহাড়ের চূ ড়ায়'চারিদিকে। মুক্ত অঙ্গনে উপছে পড়েছিল চাঁদের হাসি'আলোর বন্যা! আমি দিগন্ত মাঠ পাড়ি দিয়েছিলাম একাকী! গাছের পাতায় পাতায় আলোর ফু লঝু রি; শব্দেরা নির্বাক! ভাবনায় মগ্নতা চেতনায় সংগীত আঁখিতে আলোর মুগ্ধতা। তারাই মাঝে দোলা জেগেছিল খুজে ঁ পেতে -সেই নির্মাল্যকে!! সে আসে। এমনই তর রাতেই সে আসে। তাই অনেক হেঁ টেছি সে রাতে মহুয়া , শাল,সিজু-সেগুনের মায়া কাটিয়ে'----তারার দেশে ! সুদর ূ নিহারিকায়, যেখানে পরীরা হাসে! নীরব, নিভৃ ত,-নির্জ নতার মাঝে, সে আসে! এ খোঁজা একদিনের নয়হাজার বছর; হয় ত বা তার থেকেও বেশি; হয় ত বা অনন্তকাল, নিরুদ্দেশের যাত্রা! এখন পর্ন বেলায়, ঝাপসা হয়ে আসে ইতিহাস

সব দিগন্ত থামে একখানে। মাঙ্গলীক শব্দগুলো ঠনঠন বড় বাজে! বিঠাফেনের শিম্পনির মল্লার'-বেসুরো বিসমিল্লার সানাই ও তাই----চিরাগের আলো বড় ঝলসানো; ক্লান্ত পাখিদের নীড়ে ফেরা বড় ভালো লাগে তাই----তবু ও খুজ ঁ তে থাকি তাকে খুজি ঁ সেই রাত! সেই এলে, পাতায় পাতায় ওঠে জাগরণ ঢেউ ওঠে দুলে পর্ন হয়ে ওঠে পূর্ণশিরায় শিরায় জাগে জাগে শিহরণ প্রতি লোমকূপে কম্পন। সে এক অনাবিল আনন্দ!! সে একদিন ধরা দেবে সেদিন হয়তো শত সমুদ্রের ফেনা ভরা মুক্ত আলোর বন্যা আর হাসি নিয়ে; সে আলোয় আলোয় আমিও আলোকিত হব একদিন। সে কবে? সে কবে?? সে -ই জানে!!! __________ ২ অধরা আমি এক দিন তোমার সাথে হব লীন; সেদিন হয়তো চৈত্রের কোনো সন্ধ্যা,

তু মি একাকী ব'সে আছো দাওয়ায়! দখিনা হাওয়ায় তোমার ক্লান্তি মুছায়ে আকুল নয়ন স্বপন মগন তোমারে ধরিছে জড়ায়ে। সন্ধ্যা তারা আকাশের গায় হাসিয়া ভরিছে আলোক মালায় তু মি ভাবিছ কি সে ক্ষণে নীরব নির্জ নে গোপন স্মৃতিপথে আমায়?? অভীসারিকা এ মন, খোঁজে তোমায় অনুক্ষণ মর্ম বাজে ধ্বনি দুরগামী এ ঝরা পাতায়!! আলোর গগন ছেয়ে, তু মি এলে কি গো নেয়েবকুল বেলি ও চম্পায়? কে ফু লদল মেলি, করিছে গন্ধ কেলি আলোর বন্যায়। চকর-চকরি সে কি যাদু,-মরি মরি বিলাপ ভু লিয়া গেল নীড়ের ঠিকানায়, আসে সুর ভেসে ভেসে বনতল ছুঁ য়ে শেষে বিরহ ছড়ায়ে যায় গোপন ব্যথায়! সন্ধ্যা স্বপন -রাগে জীর্ণ প্রেম জাগে প্রথম দেখার স্মৃতি সে বকুলের তলায়; আর কাঁদাইও না মোরে

বাঁধো মোরে বাহু ডোরে সে কি গো শুধু ভাবনায়! আজ তু মি কত দূরে! দূর, তবু নয় দূরে তীর ভাঙা ঢেউ ফিরে মিলাবে আমায়-----।

৩ "বিষন্ন তীরে" ___________ চৈতের মধ্যাহ্ন নিথর নিস্তব্ধ চারিধার খোলা জানলায় মুখ রেখে একদৃষ্টে চেয়ে আছে দীপান্বিতা। দূরে চল চঞ্চল কংসাবতী যৌবনের প্রাবল্যতা হারিয়ে ক্ষীণ ধারায় বইছে; ধীর,-আরো ধীর! নৌকা ঠেকে যায় মাঝ পথে মাঝি থেকে থেকে হয়ে ওঠে অস্থির নদীর ভাঙে না মৌনতা! জানলায় মুখ রেখে বসে আছে দীপান্বিতা! মনের সাথে আর নদীর সাথে কি গভীর সম্পর্ক ' একরাশ ঝরা পালক! রঙ আছে'--অনেক, লাল নীল সাদা কালো গোলাপী, তবু"ঝরা"ব'লে আদর নেই--সোহাগ নেই

নেই কোন উন্মাদনা স্পর্শ! আছে শুধু ধুলোট-কঠিনতা;--জানালায় মুখ রেখে নদীর দিকে একদৃষ্টে চেয়ে আছে দীপান্বিতা! দুপুর ঝাঁঝা ওপারের পায়ে চলা মেঠো পথ একাকী পড়ে আছে এক যুগ! কোন আগন্তুক নেই! যারা ঘাটে এসেছিল ফিরে গেছে ছায়ায় তপ্ত দাহ চারিদিকে কিলবিল; দীপান্বিতার মনে পড়ছে এমনই এক দিনে এসেছিল রৌদ্র দগ্ধ ক্লান্তি নিয়ে সুমন,_ তার প্রিয় বন্ধু, হাতে হাত রেখে বলেছিল "এস নীড় বাঁধি দুজনায়" তার ক্লান্তির মাঝে ছিল দৃঢ় প্রত্যয়, ছিল মলয় ছিল মুগ্ধ প্লাবন; সহসা সংহত কঠিন ঝড়ে সব দিগন্ত কম্পিত,___ ধূলি ঝড়! আজ সে জীবন শুধু ধূসর! ছায়া হীন! শূন্যতা! জানালায় মুখ রেখে

বসে আছে দীপান্বিতা! নদীও তার দিকে তাকিয়ে আছে ব্যাপক_ নদী ও সে একসাথে পাশাপাশি, এক ই সুর, এক ই কান্না, এক ই শুষ্ক হাসি! তবু ঢের নদী ফিরে পায় তার যৌবন, আবর্ত ন ধারায়রচে ফু লসেজ রচনা' সাজে নব নব সাজে; সে,--বীভৎসা! বিগত যৌবনা, তার কুন্দ কুসুম কৌমুদি কঙ্ক রঞ্জনা, সে তো এসেছিল একবার মোহনার অতি কাছে পৃথিবীর দুঃখ ভোলাবার; নদী ও সে দুই তীর, এক বিষন্নতার একজনের কিছু বিরতির একজনের চির হাহাকার! মধ্যাহ্ন, হীন বদান্যতা__ জানালায় মুখ রেখে ভাবছে দীপান্বিতা!! ৪ বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষে "কবিতা পাঠের আসর" ________________ কবিতায় কবিকে খুজ ঁ তে এসেছি কবিতার আসরে'___ পাশাপাশি পথচলা চিরদিন

নতু ন কি আর দেখি তাঁরে;_ ঝিল-মাটি-রঙ,তরুছায়া'এ সব কেন প্রয়োজন? এক ই মাটিতে আমরা ও কবি' চরাচর করেছি নিমন্ত্রন! মেঘ-বাদল-বৃষ্টি,--আদ্য প্রান্ত নিত্য চলনশীল, সময়ের গতিধারা বাহ্য রূপ তার অনির্বন্ধন উত্তাল ফেনীল! কতটু কু তার নিতে পারি কুড়ায়ে' জীর্ণ-পৃষ্ঠ,--দূর মরুদ্যান, করাগত তার করি গো কেবলই ভাবে ও আবেগে যা দৃশ্যমান; তাই খুজি ঁ কবিরে কাব্যরস ধারায় উদাস-ঊষর '--নয় একাকী, আমাদের ই ধারা প্রবাহ বয়ে সদা থাকে কর্মযোগে নিত্য পুলকী। এতক্ষন পরে'-শেষে সভাপতি উত্তর করিলেন ধীরে_ কবিতার আসরে কবিতার ধারা, কাব্য গাথা নয় কবিকে ঘিরে।" তবু, কবিকে নিয়েই কবিতা, কবি ছাড়া কবিতা নয়,--আমাদের ই মাঝে সে নিয়ত সুখে দুঃখে তবু,ভাবনা জগৎ তাঁর ঊর্ধ্বময়। একই আকাশের নীচে আছে আমরা ও কবি'___ আমরা খুজে ঁ ছি আকাশের সীমানা! কবি খুজে ঁ ছে নীল,__নীলের ও নীল ছবি!! আমরা খুজে ঁ ছি তার ছায়া,---কালোরূপ! কবি খুজে ঁ ছে তার দীপ্তি; আমরা খুজে ঁ ছি তার অবয়ব-মাংস , হাঁড়পাশ! কবি খুজে ঁ ছে তার ব্যাপ্তি। আমরা গুনেছি সমুদ্রের ঢেউ উত্তঙগ-উথাল পাথাল!

কবি খুজে ঁ ছে তরঙ্গের উৎস ধারা'-নির্ণিমেষ_ অতলান্ত'-বিপুল ও বিশাল! সবুজের সীমানা, পথঘাট সমুদ্র নোনা বালুচর এসব নিয়েই কবির জগৎ, আলো-আঁধার আকাশ তারার খেলা, মাঝে দ্বীপ কবি, সজীব সতত। কথা বাজে হৃদয়ের অতি কাছে আমাদেরই আঙীনায়,____ মরমী লেখনীতে লিখে যায় লিপিখানি আমাদেরই বেদনায়।

বিশ্ব কবিতা দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলী– উৎসর্গ বিউটি কর্মকার নিত্যদিনই তোমার আসা যাওয়া, অন্তরে বাহিরে নিদ্রায় জাগরণে। হ্যাঁ, বলতে পারো প্রেমেই পড়েছি, তোমার প্রেমে দিনরাত একাকার। আনন্দে, বিরহে, একাকীত্বে, কখনো বা বন্ধু সমাগমেতু মিই আমার গোপন সখা ঠিক শ্রীকৃ ষ্ণের মত! হ্যাঁ, তু মিই আমার প্রেম, সুখের কবিতা! আলাদা কোন দিন নেই তোমায় উৎসর্গ করার, তাইতো আমার সাদা খাতায় নিত্যপূজা তোমার। কলমের নাম সোনার কাঠি, ছোঁয়াতেই বিপ্লব। তু মিই আমার অশ্রুজলে

স্নেহের অর্ণব।

ডাঃ সুভাষ চন্দ্র সরকারের কাবিতা– ১ *বসন্ত পঞ্চমী বলে গেল* ------------------------------বসন্ত পঞ্চমী বলে গেল বসন্ত এসেছে দুয়ারে, পলাশের কুঁ ড়ি উঁকি মারে পল্লবিত কিশলয়ের মাঝে। কোকিলের আনাগোনা মুকুলিত আম্রশাখে, রঙিন মনজোড়া বসন্ত বিলাসে। বসন্ত পঞ্চমী বলে গেল আসবে ফাগুন পলাশের রঙ মেখে। মন মাতানো মহুয়ার সুবাস মৌতাত আনবে মনে, মৃদু মন্দ দক্ষিণা বাতাসে ষোড়শীর দুলকি চালে; গুণ গুণ গানে। বসন্ত পঞ্চমী বলে গেল ঋতু রাজ বসন্ত আসবে ফাগুনে।।

২ ভাষা আন্দোলন অবলম্বনে কবিতা --*বসন্ত এখনোও কাঁদে* -------------------------ফাগুন যখন আসে ; বসন্ত এখনোও কাঁদে, কাঁদে ভাষা আন্দোলনে " রমনার" রৌদ্র দগ্ধ কৃ ষ্ণচূ ড়া- শিমূল - রুদ্র পলাশ, এরাই সাক্ষী ছিলো, শহীদ দের রক্তাক্ত বুকে পুষ্প ঝরিয়ে ছিলো। ফাগুন যখন আসে ; বসন্ত এখনোও কাঁদে, সন্তান হারা মায়ের আর্ত নাদ ; স্বামী হারা বধূর বিলাপ পিতৃ হারা শিশুর নির্বাক চাহুনি। তারি মাঝে দমবন্ধ করা বারুদের গন্ধ বাতাসে। ফাগুন যখন আসে ; বসন্ত এখনোও কাঁদে, মনে হয় শহীদ দের তাজা রক্তের গন্ধ ভেসে আসে বাতাসে। ফাগুন এলে কানে বাজে জিন্নাহ - খান নিপাত যাক, বাংলা মায়ের মাতৃ ভাষা বাঙালির কন্ঠে অক্ষয় থাক। ভোরের সূর্যের আলোর সাথে ; গাইতে থাকি--আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো;একুশে ফেব্রুয়ারী আমরা কি ভু লতে পারি। এই ফাগুনে ভাষা আন্দোলন ; তাই ফাগুন যখন আসে ; বসন্ত এখনোও কাঁদে।।

৩ ভাষা আন্দোলন অবলম্বনে বত্রিশা গদ্য অনু কবিতা– *শহীদ স্মরণে* -----------------------ফেব্রুয়ারী মানে ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত একুশে ফেব্রুয়ারি; কৃ ষ্ণচূ ড়া শিমূল জানিয়ে দেয় আমাদের মতো লাল হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। ভাষা আন্দোলনে শহীদ হয়েছিল ; জব্বর - সালাম - বরকত, প্রাণের বিনিময়ে বাংলা ভাষার অধিকার মহান একুশে ফেব্রুয়ারি।।

তু মি আর আমি তাপসী ব্যানার্জী

চলো না দুজনে মেঠো পথে বাউল হবো একতারা টার একটা তারই বাজিয়ে যাবো । আচ্ছা যদি শ্রাবণ ধারায় ভিজি দুজন হারিয়ে ফেলি কালো মেঘে খেয়ালি এ মন । তু মি কি আমার সঙ্গে যাবে পক্ষীরাজে? যদি তোমাকে সাজিয়ে দিই রাজপুত্রের সাজে চল না দুজন দূর আকাশে স্বপ্ন খুজি ঁ তোমার মনের ঐ ইচ্ছে গুলো একটু বুঝি । আচ্ছা যদি পাহাড় টাকে ডিঙিয়ে আসি বলবে তখন জড়িয়ে আমায় ভালোবাসি ? মরুর দেশে উড়িয়ে বালি উটের ক্ষু রে চলো না আসি ইচ্ছে ডানায় একটু ঘুরে । তোমার চোখেতেই সুখ খুজে ঁ পাই মনের ঘরে তাই তো তোমাকে বেঁধে রাখি আপন ডোরে । চলো না নদী ,সাগর পার হই ডু ব সাঁতারে উথাল পাথাল ঢেউ যে আসে হৃদ মাঝারে ।

ক্যানভাসে তে রোজই আঁকি তোমার ছবি রঙ ছিটিয়ে রাঙিয়ে যে দেয় অস্তরবি । সন্ধ্যা যখন নামে নদীর দুপাড় জুড়ে ভালো থাকার গান বেঁধে নিই একই সুরে । তোমার বা আমার ভালোবাসার একটা বাড়ি আলোর মাঝে দাঁড়িয়ে দুজন শপথ করি । থাকবো পাশে সারা জীবন দুঃখ সুখে কাটিয়ে দেবো সকল বাধাই হাসিমুখে ।

একগুচ্ছ অণু কবিতা চাঁদের কাছে এসে সেদি বাসুদেব সরকার ১ আলাপ থে,ন সন্ধ্যেরাতে। সাক্ষী রইলো জগতবাসী দেখলো সবে, দু'জনের-ই মাঝে তো প্রেম হলো তবে? ২ মুগ্ধ চাঁদ কুমারীর রূপে মুগ্ধ শুক্র বাবু, যেমনি তোমার রূপ-যৌবনে হলাম কাবু!

৩ সাঁতার চাঁদের কাছে এসে শুক্র জোছনা মাখে, কাছে পেলে কাটতাম সাঁতার তোমার বুকে। ৪ যুগল মিলন চাঁদ ও শুক্রের যুগল মিলন আকাশ গাঙের বাঁকে, সুখ পায় শুক্র, চাঁদের জোছনা সারা গায়ে মেখে। তেমন করে তোমাকে চাই কাছে আমার পেতে, প্রেম যমুনায় প্রেম সাঁতারে ওঠবো দু'জন মেতে।

ভালোবাসি বিধাত্রী চট্টোপাধ্যায় সবাই আমায় ভালোবাসে,প্রাণের মাঝে হাসি আমিও তেমন সকলকেই,ভীষণ ভালোবাসি। আমার প্রিয় মানুষজন এবং লতা-পাতা তারা আমার প্রাণের ভাব,উচ্চারিত কথা। পাখির ডাক ভোরের আলো,তেপান্তরের মাঠ তাদের আমি ভালোবাসি,সঙ্গে নদীর ঘাট। খেলনা যত পুতুল আছে, সঙ্গে যত বই পরিচয়ে তাদের আমি, ছোট্ট বন্ধু হই। দিনের আলো রাতের তারা,প্রাণ ভোলানো গান ভালোবাসার মধুর সুর,যেন ঐকতান। সবমিলিয়ে বিশ্বজগত,মস্ত পরিবার ভালোবাসার বন্ধনেতে,হয়েছে একাকার।

'উত্তরমালা' আজও খুজে ঁ পাইনি– সজল চক্রবর্তী ঘৃতকুমারী'র পাতায় একদিন হাত রেখে ব'লেছিলে তু মি, থুড়ি- তু মি নও, তোমার কুমারী হৃদয় দিয়েছিল বরাভয়ব'লেছিল, ব'লেছিল: "তোমাদের ছেড়ে যাবোনা, নাঃ, কোনো কিছু তেই নয়!" অথচ তু মিই চলে গেলে আমাদের একলা ফেলে... জানি, মৃত্যু'র হাতছানি টলাতে পারেনি তোমার কুসুম-হৃদয়। সন্তত সকরুণ এক প্রশ্নমালাএই সব'প্রেম' , এই সব 'ভালোবাসা' সত্যিই ধনী? উত্তরমালা আজও খুজে ঁ পাইনি! -

প্রেম মহাজিস মণ্ডল ছুঁ য়ে দেখো,স্পর্শ করে গভীর নৌকার ভিতর শুধুই গনগনে আগুনের আঁচ ধূসর কিংবা বিষাদে আলো কিংবা অন্ধকারে শামুকের মতো হেঁ টে গেলেই বোঝা যায় প্রেমের নিগূঢ় ভাষা...

মিথ্যে মুহা আকমাল হোসেন

হ্যাঁ, এই দেহটায় পঞ্চভূ তের কাছে মিথ্যে তু ই দে- আরো; কিছু ঘৃণা জরি জুড়ে দে।

মিথ্যে এ্যকাউন্টে তোর জন্য পাপ বীমা করি মিথ্যে -মিথ্যে সব স্বর্ণ কয়েক ভরি।

মিথ্যে চু রি করে রাখি সম্পর্কে র সীলমোহর মিথ্যে লিমা কৃ ত আমার প্রচীন শহর।

মিথ্যে তোর জন্য চোখ উপড়ে রাখি টেবিলে মধ্যরাতে নিশাচর নামে অনলাইন উষ্ণ বিলে দুপুরের শালিক ঘুম ছিড়া খেয়েছে গাঙচিল।

মৃত্যুদণ্ড –- মনীষা কর মেয়ে হয়ে জন্মানো যদি অপরাধ হয়ে থাকে মানুষকে ভালবাসা যদি অপরাধ হয়ে থাকে ঘরের বাইরে পা রাখা যদি অপরাধ হয়ে থাকে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তবে হ্যাঁ আমি অপরাধ করেছি... কবিতার জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেওয়া যদি অপরাধ হয়ে থাকে না পাওয়ার বেদনায় মন উদাস হওয়া যদি অপরাধ হয়ে থাকে আকাশকে নদীকে ভালবেসে ইচ্ছেনদীর বয়ে যাওয়া যদি অপরাধ হয়ে থাকে গাঙচিল গঙ্গাফড়িং সবুজ শেওলাকে ভালবাসা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তবে হ্যাঁ আমি অপরাধ করেছি... ছোট্ট কুড়েঘরকে তাজমহল বানানোর স্বপ্ন দেখা যদি অপরাধ হয়ে থাকে চাপলুশি না করতে পারাটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে মুখ বন্ধ করে অত্যাচার সহ্য করতে থাকা যদি অপরাধ হয়ে থাকে সংসারের মঙ্গলের জন্য দিনরাত এক করে দেওয়া যদি অপরাধ হয়ে থাকে তবে হ্যাঁ আমি অপরাধ করেছি... মহামান্য আদালত আপনি আমাকে মৃত্যুদণ্ড দিন। আমার লাল রক্ত শুকিয়ে নীল হয়েছে,

জ্যোৎস্নার আলো দাউদাউ জ্বলছে নিরন্তর সামনে পিছনে ডাইনে বায়ে নিকষ কালো অন্ধকার আলোর ঠিকানা হারিয়ে ফেলেছি আমি... এরমধ্যে বেঁচে থাকার থেকে মৃত্যু অনেক ভালো... মৃত্যু অনেক ভালো।।

অথবা প্রতিশোধ জয়িতা ভট্টাচার্য

নদীর পাশে বসলে দেখা যাবে সেতু চলে গেছে এপার-ওপার। এখনও আবছা নয় ওপারের গাছপালা,বাড়ি ঘর,উঠোন সংসার। দেখে নাও,এই সেই নদী যে পেরিয়ে এসেছে ধান জমির পাশে জল ঘেঁষা লাশ আর একগ্রাম অন্ধকার। আমরা এসেছি সেইখানে আজ। আজ সব আলো হয়ে আছে,দ্যাখো। সব হায়নার হাসি চু প করে গেছে। নোখ দাঁত ভেঙে নেকড়ের দল ঘুমিয়ে পড়েছে। আর ওই যে, রানী মৌমাছি,হেরে গিয়ে চু পচাপ বসে আছে ওইখানে। দ্যাখো,ওই যে অশত্থের নীচে প্রাচীন দেবতা মাটি হয়ে গেছে আজ,এই বিকেলে। এখন,হাটের পাশে পৃথিবীর সব বোঝা নামিয়ে রেখে হরিণ হরিণা এসেছে সরস্বতি নদীর পাড়ে। তোমরা সকলে জানো, একদিন আমরা যাত্রা করেছিলাম অবিশ্বাসের হাত ধরে দুর্গম এক শ্বাপদ ভরা পথে। কোনো নির্দি ষ্ট লক্ষ্য ছিলো না। মাথার ওপর কোনো তারা বলে দেয়নি নিয়তি। আমরা তবুও পার হয়ে গেছি উপত্যকা আর মরুভূ মি। তারপর আগুন জ্বেলেছি।মেলে ধরেছি আমরা মানচিত্র আর খুটি ঁ য়ে খুটি ঁ য়ে চিহ্নিত করে রেখেছি বিস্ফোরণের কেন্দ্রগুলি।

আমরা নদীমাতৃ ক দেশে নবান্ন লিখেছি। তু মি আর আমি। আর তারপর এই মিলিত সন্ধা এলো। বহু দুরের শৈল শিখর দেখা গেলো। ওখানে মন্দির থেকে ঘন্টার ধ্বনি আজ জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের অনন্ত আনন্দযাত্রার কাহিনী ভালোবাসা জিতে যায় একথা জানে আকাশ। নদী জানে মাটি জানে।

বৃষ্টি আজও পড়ে ডঃ তাপস কুমার সরকার বৃষ্টি আজও পড়ে। কাগজনৌকো ভাসানো আর হয়ে ওঠে না। আকাশ জুড়ে বৃষ্টি আজও নামেশরীর ভেজে; মন ভেজাবার সময় কোথায়.... প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে খুজি ঁ শান্তির সমন্বয়। বাইরে দেখাই হাসিমুখ ভিতরে ভিতরে ক্ষয়; ভালো আছি বোঝানোটাই যে নিখুত ঁ অভিনয়। দীপ জ্বেলে যাই রোজ সন্ধ্যায় এখনও; ভাঁড়ের চায়ে স্পর্শ করি দেশের মাটির অনুভূতি; ভালবাসায় খুজি ঁ অনুভূতির পূর্ণতা ছন্দ হারিয়ে পৃথিবী আজ ভু গছে গভীর অসুখে; ভালবাসা তবু বেঁচে বেঁচে থাকে সম্পর্কে র নিরিখে। সম্পর্ক ফু রিয়ে যায় কথা হলে শেষ খুজে ঁ পেতে চাই পুরানো সেই ভালবাসার রেশ।

প্রসেনজিৎ মান্ডীর কবিতা– ১ *স্বপ্ন জাগাবো*

তোমার হাতে লাঞ্ছিত অবহেলিত সেই দিনের সেই আশা আজ বর্ষায় ভিজে ভাষা পেল দুটো কথা বলার তাগিদ পেল। তু মি, তোমার নির্দ য় চোখ চোখের সাথে আমি পারলাম না যদিও একাত্ম হতে তবু জেনো আমি মাটির প্রতিটি কোনায় স্বপ্ন জাগাবো।

২ *দুঃস্বপ্ন*

শীতের সকালের এক গুচ্ছ রোদ

যা একটা টাটকা গোলাপের মতো দুচোখ ভরা স্বপ্ন দিয়ে ছিল। সেদিন শহরের নোংরায় নর্দ মাতে, স্যাঁতস্যাঁতে অন্ধকার গলিতেও পূর্ণিমার চাঁদের আলো এসে খেলা করেছিল, আর দেখিয়েছিল ঘুমের ঘোরে দুঃস্বপ্ন যা আমি চাইনি কোনদিনও। এক অমানুষিক নির্মম সত্তা যা আমাকে করেছে উদ্ধত করেছে নির্বাক লাঞ্চিত করেছে - করেছে শোষণ। আমি এক তু চ্ছ ক্ষয়িষ্ণু প্রাণ। ঝিনুকের খোলের ভেতর দিন গুনি হয়তো কোন দিন, আবার আসবে সেই শীতের সকাল দেবে দু-চোখ ভরা স্বপ্ন আর বাঁচার আশ হয়তো সেদিনও কুয়াশায় ঢেকে ফেলব, এই সত্তাকে --

দুঃখ পোড়ায় সুখ কৃ ষ্ণকলি

আমার জন‍্যে পাতিলে দুঃখ রান্না হয় দুবেলা ভীষণ ঝড়ে হৃদয় টু করো হলে সে চিহ্ন সব লুকিয়ে ফেলি সহজেই। আমার ঘুমভাঙা চোখ, তু মিহীন সকালের সুখ সব কিছু জ্বলে যায় আগুনের আঁচে। আমার কোনো স্বপ্ন নেই অথচ স্মৃতি বুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি রোজ; সুখের চাদর সরে যায় কোনো ঘূর্ণিঝড়ে। দুঃখ থাকে তোলা গোপন হৃদয় জুড়ে; অসাড় শরীর ছুঁ য়ে যায় নিরাসক্ত চিতা। দুঃখ সয়ে ভু লে যাই মৃত্তিকার স্বাদ; তবুও প্রতিনিয়ত দুঃখ পাতিল আমারই জন‍্যে জ্বলছে দুবেলা। _____________

তু মি আমার ভ্যালেণ্টাইন রানা জামান

আমার অন্তর বাঁশি হয়ে শুধু বাজায় তোমার নামের বন্দনা মনের দর্পণে তু মি আদ্যপান্ত আর সব গাঢ় অন্ধকার জলোচ্ছ্বাসে প্রেম নিখাদ সতত আমার নাড়িতে যে নদী তাতেও তোমার নামের স্রোত বহে নিরবধি বিন্ধ্যাচল ভাঙে প্রেমের উচ্ছ্বাসে পূর্ণিমা রাত্রিতে শুধু নয় মন প্রতিপলে উদ্বেল অশেষ তোমাকে দেখার ক্ষণ হতে প্রতিটি দিবস ভ্যালেণ্টাইন তোমার প্রচ্ছায় ঠোঁটের কাঁপন আমার নিঃশ্বাস আমার হৃদয় বিপরীতে মৃত্যু প্রতিক্ষণে অপেক্ষার ফু ল শুকিয়ে যাওয়ায়

আমার ভ্যালেণ্টাইন কি সুমধুর? প্রতিবর্ষে চৌদ্দ ফেব্রুয়ারি দিবারাত্রি পূর্ণিমার লোনাজলে ডু বে থাকিনা এলেও তু মি আমার ভ্যালেণ্টাইন!

প্রেম স্বীকৃ তি মধুরিমা ব্যানার্জ্জী অনেক কষ্টের উক্তি হাজার না বলা কথা ছিল অর্পণের মনে রিয়ার প্রতি নিদারুণ প্রেম ছিল গহিন গোপনে। যেদিন ফার্স্ট ইয়ারে প্রথম রিয়াকে দেখেছিল অর্পণ মনে মনে তার কাছেই হৃদয়ের অলিগলি করেছে সমর্পণ। পাত্তা না পাওয়া অখ্যাত প্রেমিক অর্পণের মনখারাপ চাপা পড়ে যায় কলেজের দেওয়ালে, রিয়াও নিরুত্তাপ। আজ ভালোবাসার নিরিখে অর্পণ রিয়ার থেকে দূরে ভাবেনি কোনওদিন পাবে সে ভালোবাসা এত ঘুরে ঘুরে। বিহন ছিল রিয়ার প্রথম প্রেম, শেষবেলার আলো চিট করে চলে গেল, ওর জগত হয়ে গেল কালো। অর্পণের মত মাটির মানুষের সাথে খিল্লি করে দাম দিল জীবনের বিহন ঠকালো তাকে, সত্যি হল জটিল সত্যরা। স্বীকৃ তি যদি পেত অর্পণ রিয়ার সম্পর্ক

আজ বইতে হত না বিরহের কথামালার তর্ক । আজ রিয়া বুঝেছে স্বীকৃ ত প্রকৃ ত অমর প্রেম অমর বলে কিছু নেই, পাশে থাকা, ভরসাটাই আসল গেম।

স্মৃতি শেখর মিত্রের কবিতা – ১ কেউ জানে না

আমরা চলেছি কোন পথে কেউ তা জানে না। রাতের তারারা আজ এতো অনুজ্জ্বল কেন? কোন বিরহী নদীর তট কখন বঙ্কিম হবে আর শস্য শ্যামলা ভূ খন্ডকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে নিজস্ব গতিবেগে--হঠাৎ হড়কাবানে সমস্ত বাসভূ মি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে জেগে উঠবে নূতন চর কেউ তা জানে না। একমাত্র ভবিষ্যৎ তার কথা লিখবে, একদিন ইতিহাসের পাতায় পাতায়। ২ সঞ্চয় পাখিরা সব খড়কুটো সাজায় ঘর বাঁধার জন্য। আমাদের উদ্বাস্তু জীবনে কোন ভালবাসা নেই...... তবু মানুষ চেষ্টা চালিয়ে যায় সারাটা জীবন কিছু ভালবাসা সঞ্চয়ের অভ্যাসে গাছতলায় অথবা রেল স্টেশনের সামনে পড়ে থাকা সুড়ঙ্গের সন্ধানে।

উত্তম চক্রবর্তীর কবিতা– ১ এবার আমিও

এবার আমিও অক্ষর হয়ে শোভা পাব তোমার বরফ সাদা মনের পৃষ্ঠায় । তোমার অবসন্ন মুহূর্ত গুলির ফাঁকে ফাঁকে ঘুম জড়ানো চোখে কয়েক লাইন পড়ে নিও, আর একঘেয়ে ভাব যদি কোন দিন কাগজওয়ালার কাছে নিশ্চিন্তে বেচে দিও। এবার আমিও বর্ষার জল হয়ে রয়ে যাব তোমার শুকিয়ে যাওয়া মনের কুয়োও ।

তোমার উপোস করার দিনে কাক ভোরে দু’ বালতি জলে স্নান করে নিও, আর যদি ময়লা বাসন এতে ধুতে চাও বাড়ির ঝিকে দিয়ে নিশ্চিন্তে ধুয়ে নিও ।

এবার আমিও খাট হয়ে শোভা পাব তোমার মনের সাজানো বেডরুমে। তোমার যৌবন ক্লান্ত শরীরটাকে ফেলে যখন খুশি এতে ঘুমিয়ে নিও, আর যদি কোনদিন উই ধরে যায় এতে নিশ্চিন্তে কেটে কুটে উনুনে জ্বেলে দিও । ---------

২ আমায় দোষ দিও না

আমি যদি বদলে গিয়ে মেঘ হয়ে ভাসতে ভাসতে আকাশটাকে ভেঙে টু করো টু করো করতে করতে ঢাক ঢোল বাজিয়ে

বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ি, আমায় দোষ দিওনা.

আমি যদি বদলে গিয়ে মরুভূ মি হয়ে হা পিত্যেশ করে সারাদিন রোদ্দুর গিলে বসে থাকি উটের পায়ের খোঁচার জন্য, আমায় দোষ দিওনা.

আমি যদি বদলে গিয়ে একটা রুপার টাকা হয়ে ঘুরে ঘুরে ফিরি লোকের নোংরা হাতে হাতে, আমায় দোষ দিওনা .

আমি যদি বদলে গিয়ে আমার কলমে কবিতার বদলে ঝরাই নোনতা লাল রক্ত,

আমায় দোষ দিওনা. ---------

৩ সে যে তু মি

মাঝে মাঝে ননে হয় মন নিয়ে মাতা মাতি করাটাই মাতলামি ।

আবার কখনো ভাবি আকাশকে না দেখে আমায় নিয়ে মেতে থাকাই আতলামি ।

পরক্ষনেই মনে হয় পেছন পানে তাকিয়ে প্রেমে গা ভাসানোটাই পাগলামি।

কখনোবা মনে হয় কার কথা ভু লে গিয়ে কঠিন হওয়াটাই কিপটামি ।

সব ভাবা ছেড়ে দিয়ে সকাল হলেই ভাবি সবার প্রথমে যাকে সে যে তু মি । -------

৪ অবিচার

অযান্ত্রিক সময়ে অপার্থিব উচ্চাশায় অসমতল স্বপ্নে অব্যক্ত ভাষায় অনুচ্চারিত কণ্ঠে

অকৃ ত্রিম হৃদয়ে অপরিপক্ক জ্ঞানে অসংলগ্ন জীবনে অতু লনীয়া তু মি অনুপ্রেরণা আমার ।

বিবস্ত্র মনে বিকশিত যৌবনে বিখন্ডিত কল্পনায় বিচলিত দিনক্ষণে বিশাল আকাশটাতে বিরহের বজ্রাঘাতে বিধ্বস্ত করে দিলে অতু লনীয়া তু মি অনুপ্রেরণা আমার । --------

সান্ত্বনা চ্যাটার্জীর কবিতা–১ ফিরে দেখা

ফিরে ফিরে দেখা, যেদিন প্রথম ফু টেছিল ফু ল, আকুল হৃদয় জুরে প্রেমের আগুন, সদ্য ফোটা কুসুম কোমল, অপার কৌতু হল, বুঝিনি সে সবই মনের ভু ল। কেউ তো বোঝেনা। আড়ালে কে যে বসে পুতুল নাচায় । দুরন্ত দূর্বার স্রোতে ভাসায় দুকুল। এক দিন খেলা শেষে ফেলে রেখে যায়, দেয় না আশ্রয়। যদি ভালো চাও নিজে বুঝে নাও। ভালোবেসে যত কিছু করেছ আপন, কেবলই আপন সুখে বেঁধেছিলে তারে মনের মতন যদি না হয় সে ঘর, জীবন সাথী যদি মনে হয় পর এ নয় এ নয় যাকে বেসেছিলে ভালো, অন্ধকার জীবনের আলো

তখনও কি বোঝোনা তু মি, স্বর্গ মর্ত পাতাল ঘিরে শুধু ই আপন সুখ করেছ অন্বেষণ । আপন কল্পনার প্রতিবিম্ব ভেবেছ তাকে । পুরুষ আর প্রকৃ তি যেমন আদি অন্ত কাল সৃষ্টি খেলায় মাতাল একই অঙ্গে দুটি রূপ ধরে; মানুষ না বুঝে আপন সুখ খুজে ঁ খুজে ঁ মরে

২ সত্ত্বা

বিপরীত মেরুর মতন আমরা ছু টেছিক্লান্ত শ্রান্ত না-পাওয়ার ব্যথা ভার নিয়ে বুকে একে অপরের দিকে। দুরন্ত দুর্বার কে শান্ত স্নেহ ছায়া দুবাহু ঘিরে বন্দী করতে প্রেমের গভীরে।কেউ বা স্নিগ্ধ প্রেম ,নীড় থেকে কেড়ে চেয়েছো নিয়ে যেতে , তোমায় বুঝিনি আমি -না তু মি আমার প্রকৃ তি! আপন সত্ত্বা পারেনা যে কেউ ছেড়ে যেতে। ভালোবাসা তখনই গভীর যতদিন না-পাওয়ার ব্যথা থাকে বুকে।।

৩ ছাই

ফেলে রেখে গেলে আমায় দন্ডে দন্ডে করি অনুভব তোমার অভাব । মৃত্যু এসে ছিল ঘরে আমার কোনও শক্তি নেই ধরে রাখি ঁ । আঁচলে বেঁধে গিট ঘড়ি বলে টিক টিক টিক ।

সময়ের অন্তহীন চলা থামেনা কোনও দিন। তবু ভালোবাসি তবু সাতপাকে বাঁধা পড়ি জন্মে জন্মে একে অপরের বিচ্ছেদ নেই। কি অর্থহীন এ বিশ্বাস। যতক্ষন শ্বাস শিকড় গেড়েছে মনের ভিতর যায় না সহজে। মেনে নাও মেনে নাও এই জগতের নিয়ম ব্যতিক্রম নেই। দাদা দিদি আত্মীয় স্বজন কত মানুষ গেল চলে। হৃদয় জানে হাল্কা হয়ে যায় বন্ধন ভালবাসার। তবু তোমার অগ্যস্ত যাত্রা পারিনা ভু লতে । তবু বলতে পারিনা আমিও যেতে চাই। জীবন অমূল্য ধন, আপনারে বড় ভালোবাসি। আমার মন জানে চিরকাল এক সাথে হবে না চলা দুঃখে কষ্টে মানে অভিমানে , রাগে অনুরাগে ভরা দ্বৈত জীবন। এখনও মানতে পারেনা তু মি নেই শুধু মায়ার খেলা । মৃত্যুর করাল ছায়া গেছে সরে আজ এ নতু ন ভোরে হতে চাই গৃহত্যাগী। যেখানে তোমার ছায়া রাখবে না ঘিরে, এখানে আছে শুধুই অভাব তোমার শুধু পোড়া ছাই।

অষ্টাদশী ছোঁয়ায় ডাঃ অরুণ চট্টোপাধ্যায় একটা ঝড় বয়েছিল বনেঝড় নয় ঝড়ো বাতাস। এলোমেলো ছন্দহীন উল্লাসে মেতেছিল সে শরীরটাকে নিয়ে। একটা রঙ লেগেছিল মনেরঙ নয়, রঙের আঁচড়। নিয়ন্ত্রণ-হীন ছোঁয়ায় খেলা করেছিল হৃদয়টা নিয়ে। মন আর শরীরের এই মাখামাখিটা উপভোগ্য হত, যদি না জীবন ক্রমশ মোহনার দিকে হাঁটত।

জেবুননেসা হেলেনের কবিতা– ১ সলতে পোড়ে আমাদের সেই সব কুঁ ড়ে ঘরের স্বপ্ন এখন সময়ের জ্যামিতিবক্সে কাঁটাকম্পসে বৃত্ত আঁকে। পরিধিতে আগুনের আঁচে পোড়ে রঙিন ঘুড়ি। ঘুড়িতে লেখা স্বপ্নসংসার পোড়ে। তু মি আমি উড়ি পুড়ি বোধের বারোয়ারী দরে। স্বপ্নগুলো জল হয়ে ঝরে বেঘরে।

২ সংকীর্ণ জনপদ

খেলা শেষে পড়ে থাকে ঘাসজড়ানো মাঠ। সকালের সোনালী আভার স্নানে যে মাঠের জেগেছিলো যৌবন, বিকেলের দোমড়ানো মোচড়ানো হুটোপুটিতে সে এখন ক্লান্ত। চৈত্রের খরা শেষে, বসন্ত গেছে চলে, আত্মভোলা গ্রীষ্মের ঝড়ো হাওয়া খেলা করে, খেলা করে পরিযায়ী বোধ হয়ে। নিসর্গের বর্ষপূর্তি হয় বারোমাসে। কেনো তবে প্রশ্নসংকূল কালবৈশাখী ও চৈত্রসংক্রান্তি?

৩ বারোমাসে বছর

কোনো কোনো প্রদোষে মানুষের ছদ্মবেশে আঁধার দাঁড়িয়ে ডাকে। আয়!আয়!আয়! শিলালিপিবোধ ঠেলে আলো জ্বালো।

মশালের শিখায় উন্মত্ত মনের রূপ দেখো। আমি পেছনে সনাতন কিন্তু প্রথাগত " চরিত্র " শব্দের কুলকুচির শব্দ শুনতে থাকি। একপা পিছাই একপা এগোই...

৪ টকটক

লেগে থাকা ঠোঁটে টক-ঝাল ঝোলে তেলে বণনাবর্ণে তু মিময় খামে ঘামের চৌহদ্দি পেরুলেই যে প্রেম! সে প্রেম আসলেই চাহিদার রঙ। টোলে পড়া রোদ ঝলমলে যে আলোর আভা, সে এক পরম প্রাপ্ত দাবা, প্রেম মানেই ভালোলাগার থাবা। প্রেম হচ্ছে, আনুভূমিক ও উলম্ব মাত্রার টান। তু মি আমি তখন রোদ- জলে ভাসা এক অনন্য সাম্পান...

৫ গল্পবলা

গল্পের ছাদ তৈরির আগে গল্পের গৃহসজ্জার প্রয়োজন। অবশ্য এরজন্য হোম ম্যানেজমেন্ট পড়ার প্রয়োজন নেই। ভিত পোক্ত করতে থিমটা আর ম্যাসেজটা ভেবে নেয়া উত্তম। খুব আকর্ষণীয় শুরু আর অনাঙ্ক্ষিত সমাপ্তি লেখকের দক্ষতা। পাঠক প্রিয়তা তখনই হবে ছাদ দেয়াল গৃহসজ্জা আর অলংকার যুৎসই জায়গা মত জমে গেলে। বরফ জমাট বাঁধা নয়। হালে পানি এত সহজে মেলে না। চর্চ ার বিকল্প যানবাহন এখনও অনাবিষ্কৃত। তু মি কি ভীত?

অন্ধকার ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনের সব ধান কাটা বাকি রয়ে গেল যাদের বর্গির দল এসে চোখ রাঙিয়ে গেল কত শত বুলবুলি খেয়ে গেল ধান। সেইসব চাষাদের দলে আমরা সবাই। যে নৌকা কথা দিয়েছিল বোঝা ভরে তু লে নেবে সবটু কু ফসলের ভার। ভেসে গেছে নেই তার নোঙরের কোনো অবসর। সব ধান মাঠে মারা গেলে চারিদিকে শুধু হাহাকার।

নেয়ে নেই হাল নেই মরণের ওই পাড়ে দেখা যায় ঘোর অন্ধকার। ।

সরল সূত্র অজিত কুমার জানা

দৃষ্টি তীর এক নিস্তব্ধ আঘাত, যার উদাহরণ সে নিজেই। চোখের পর্দ া ভেদ করে, ঢু কে যার ভেতরে সেই জানে। দিনরাত ছিঁড়ে খায় স্বস্তি, ভেঙে দেয় জানালার কাঁচ। মগজ পুকুরে ঢেলে দেয় বিষ, মাঠভর্তি যন্ত্রণার চারা, অযত্নেই বেড়ে বৃক্ষ। শাখা-প্রশাখা, পাতা, ফু ল ও ফলে, লুটিয়ে পড়ে ভাবনার শরীর। ট্রেনের কামরায়, কামরায়, দৃষ্টি তীর যাত্রীর ভিড়। যার ভিতরে অমৃত, যা জাগতিক ও ঐশ্বরিক প্রেমের, জটিল অথচ সরল সূত্র।

বীরেন্দ্রনাথ মন্ডলের কবিতা– ১ ডাকে সাড়া

তোমায় দেখলে এখনো আমার ফাগুন মাসের রং আসে। টেরপাই শুকনো কাঠগুলি দহন হয় স্মৃতির শব্দে । অনেকদিন তু মি চোখের আড়ালে ছিলে। রাগ করে চলে গেছিলে সাগর পাড়ে। আমি সেরকমই আছি। এক শক্তপোক্ত কাঠের গুড়ি । ঘুমন্ত বারুদে ভরপুর। শুধু চকমকি পাথরের ঠোকাঠু কি। তারপর দেখইনা কিরকম আগুন জ্বালায়। যতই নির্ঝ রিনির জল ছেঁ চো। নিমেষে পান করে লেলিহান হব। এ আগুন দুরন্ত আগুন। ভরা ফাগুনের প্লাবন।

তোমার যত অভিযোগ। নিমেষে হবে নীরব। যখন শান্ত হবে। আগুনও নিভে যাবে। তাহলে সঙ্গমে প্রস্তুত। বাতি নেভার আগে। হও শীতল নিশ্চু প । রামধনুর রংগে । ২ অদৃশ্যে

কাল রাতে খুব এক পশলা বৃষ্টি হলো। মধ্য বসন্তের প্রবল ধারা। আমি ঘুম থেকে উঠে বসি। মনোযোগ দিয়ে বৃষ্টির শব্দ শুনি। শুনতে শুনতে তন্ময় হয়ে যাই । তোমাকে আবছা অন্ধকারে দেখি। ধবল বস্ত্র পরিহিতা বেলি ফু লের মালায় দুবাহুর মণিবন্ধে গলায় খোঁপায়। তু মি কি ইন্দ্রের ডাকে সাড়া দিয়ে? যেতে চাও তার সভায় আমাকে জাগিয়ে। তাইতো ইন্দ্র বরুণকে দিয়ে পুষ্প ঝরিয়েছে। তোমাকে সাজবার সময় দিয়ে। ইন্দ্র এখনই আসবে তার পুষ্পক রথ নিয়ে । আমি তাকিয়ে থাকি। অঝোরে বর্ষা দেখি। তোমার ছবি ইন্দ্রধনুর। সূর্য ওঠার আগের। অদৃশ্যে যাও মিলিয়ে।

স্মৃতি প্রেরণা বড়াল -------------------শারদ পূর্ণিমায়, হাতে হাত দুজনায়, চেয়েছিনু দোঁহে দোঁহারে। আজও পড়ে মনে, তোমা আমা সনে, প্রথম দেখার দিনটিরে। ঝমঝম বরষায়, বসন যে ভিজে তায়, পারিজাত তলেতে দাঁড়ায়ে। পাশে এসে বল ধীরে, চেন কি চেন না মোরে, তোমার ছাতাটি দিলে বাড়ায়ে। যা কিছু দেওয়া নেওয়া, ছিল তা প্রান ছোঁয়া, ভরা ছিল অজানার সুখে।

তোমার নয়ন দুটি, নিয়ে নিত মন লুটি, থাকিতাম লজ্জা নত মুখে। একাকী আঁধারে শুধু, পান করে স্মৃতি মধু, কাটিয়াছে কত সে যামিনী। আজও সেই যুগপৎ , ভু লেও ভোলে না সেত, মধুবনে একাকী হরিণী।

২ অপেক্ষা ভালোবাসি তো তোমাকেই সন্দেহ নাই কোন ও ভালবাসাবাসিতে বুঝি অধিকার আছে মোর ও তু মি তা বোঝ বা ঝোঝ না মোর জানা নেই ঠিক। তাতে কিছু ই যায় আসে না ভালোবাসার আনন্দটা পাই ঠিকঠিক। আমার ভালোবাসা নিবেদনের ঢং হবে হয়তো ঠিক বা বেঠিক কিছু ই বুঝিতে পারিনা স্বয়ং যেন দিক ভ্রান্ত এক পথিক। নিরাশ হয় না তবু মন অন্তরে ভাবি সর্বক্ষন কেহ না কেহ আছে একজন তোমার আমার মিলন করাবে সে জন।

জীবন তরী পারভেজুল ইসলাম চলিতেছে জীবন অজানা এক পথ ধরি। জানি না আজ কোথায় ভেসে যাচ্ছে জীবন তরী? অজানা এক পথ ধরি, চলিতেছে মোর ভাঙা তরি। পথ হারা পথিকের ন্যায়, হারিয়েছি দূর অজানাই। নোঙর ফেলেছি যত অচেনা ঘাটে, কোথাও দাঁড়ায়নি জীবন তরী কোনো তটে। ঘাসবিহীন শুষ্ক মরুর চরে, উত্তপ্ত লাভাই যেনো পা যাচ্ছে পুড়ে। জীবন তরীর নেই জীবনের কোনো দড়ি। ছেঁ ড়া পাল তু লিয়া যাচ্ছে তরী কি হবে আর ধরি? ইচ্ছে করে না এখন আর করিতে জীবন চাষ, ধূ-ধূ মরুতে কি কেউ এখন আর একটু পানি পাছ? জীবন তরী গিয়াছে পথ ভু লি, বৈঠাবিহীন চলিলো তরী পাল তু লি।

আলো ছায়ার মেয়ে দেবকুমার মুখোপাধ্যায়

ব্রা_এর মতো লুকিয়ে আছ আড়ালে, ছায়ায় অনুরাগের ঘামের ফোঁটা জড়িয়ে থাকো আদরে, আহ্লাদে জ্যোৎস্না- পিছল শরীর তোমার, মুখের ওপর আলো _ অবলীলায় সেই আলোটি আমার মুখে জ্বালো। নিয়ম করে খবর জানো দিনের এবং রাতের ঘরের আমি ঘরকন্নার ছবিটি নাও চেয়ে, ঘরোয়া তু মি, স্বাধীন স্বভাব, দূরের দেশের মেয়ে। এমন করে কেউ বাঁধে নি মন্ত্রে, বিনি সুতোয় আমার ঘরে শুধুই তু মি আলো, ছায়ায় আছ।

"হৃদয়পুরে" ----------------পাপু মজুমদার -----------------------------শব্দগুলো কেন ছুঁ তে চায় তোমার নীরবতা? তু মি কি দূরাকাশের হলুদ পাখি নাকি মন ভু লানো অদেখা রূপকথা? কবিতা লিখি সৈকত ঘেরা বালির বুকে সৃজা, তু মি বুঝেও বুঝলে না মন পুড়ছে তোমার অসুখে...... রাত জাগি চোখের জলে, তু মি আছ ফূ র্তি র শোরগোলে ! মন চায় গতির পাতা জুড়ে লিখে ফেলি আমাদের ভালবাসা.... কেউ পড়ুক বা না পড়ুক আজীবন থেকে যাবে তু মি আমার নিশ্চু প হৃদয়পুরে.......... -----------------------------------

শাশ্বত বোসের কবিত – তবু লিখি তবু লিখি, অনৃজ,ু নক্ত সমাজের ক্ষয়িত শিরদাঁড়ায় ভর করে| বাসন্তী পীতাম্বর গায়ে মেখে, প্রেমের দুর্বল অশ্রুপাতে প্রবোধী প্রেমিকের মতো| কঞ্জমসৃত মধু গন্ধ ছড়িয়ে, আমার ঠোঁটে সে এঁকেছিল, বনেদি সংলাপের আভেরি চু ম্বন| আমার লেখায় খুজি ঁ তাকে, পরাকৃ ত উষ্ণতায়, বসন্তের অশ্মানী বহ্নিপলাশের মতো| কার ঘর আলো করে এসেছিল সে, তা জানা নেই| কার ঘরেই বা জ্বলেছিল, অন্তিম প্রহরের অক্রূর প্রদীপখানি| শুধু তার শুকতারা ভরা মুখে, দশমিক তিলের ভগ্নাংশে ডু ব দিয়েছিলুম, চৈত্রের শেষ অবীরা আণবিক ঝড়ের মতো| মনে প্রাণে বুঝেছিলুম, আমি আসলে, সাহারার উদ্বাস্তু যাযাবরের মতো, কল্পনাপ্রবণ| তবু লিখি, কারণ এই লিখতে পারাটাই আমার, একমাত্র অবলম্বন|

জানি, কোন অমূলদ সংখ্যাই পারে না, উন্নিদ্র রাতে, ফালির মতো চাঁদের বুক থেকে খসে পড়া আঁচলটা, পুরো টেনে সরাতে| গতিহীন তমসা, আমায় জাপটে ধরে, ডু বতে চাওয়া মরালির মতো| তবু চতু র্বর্গ এ জীবনে প্রেম আসে, নতু ন করে| হয়তো এই অভিশপ্ত বসন্তেই তার বাসর সাজায়, চৈতী চাঁদের বিরংসা সাঙ্গ হয়, জীর্ণ হন্বস্থির মাঝে দ্রাক্ষায়িত রুধির সংগমে| কপর্দ ক বিনে কিনতে চাওয়া জগৎটা, হঠাৎ এসে ধরা দেয় মুঠোর ভেতর| সীমন্তপথে যোনিরক্ত মেখে, সে সরে যায় অশরীরি অপলাপে কিংবা অপহাসে| প্রেম সে তো অদেয় ছিলই, এই বসন্তে হয়তো হিমশৈলও অধরা হল||

দর্পণা গঙ্গোপাধ্যাযয়ের কবিতা– ১ দক্ষিণের দরজা

দক্ষিণের বারান্দার দরজাটা বন্ধ থাকে ও দরজা দিয়ে সাগরের হাওয়া ছু টে আসে বসন্তকালে বসন্ত হবার ভয় হুঁ শুধু কি রোগের ভয় যদি দখিনা বাতাস লেগে ঠোঁট পলাশ রাঙা হয়, কামনার সুর ঝংকৃ ত হয় দক্ষিণা বাতাস উন্মত্ত হয় শান্তি কেড়ে নেয়। উত্তরে জানালা দিয়ে কৃ ষ্ণচূ ড়া রাধাচূ ড়া গাছের সারিতে লাল আর হলুদ ফু লে অলিরা হেসে খেলে গান গায়। কোকিলের কুহু ও শোনা যায়। তবুও দক্ষিণের দরজা বন্ধ। এভাবেই কাটে বেশ কিছু বসন্ত ---

শীত গ্রীষ্ম বর্ষা ! এখন আর দক্ষিণের দরজায় আকর্ষণ হয় না। কোকিলের ডাক শুনে তোমার জন্য মন উতলা হয় না একদিন হঠাৎ বিছানায় উঠে বসি বলি দক্ষিণের দরজা খোলো--আমি নিশ্বাস নেব এত বছর পর কি জানি কি করে দক্ষিণের দরজা খুলে গেল! দমকা হাওয়া ছু টে এলো--আমার চোখে মুখে --দেখতে পেলাম স্বর্গের পারিজাত। পাতার সবুজতা নেই, শুধু লাল আর অসাধারণ দুধে আলতা রং চোখ ধাঁধিয়ে যায়, আকাশ নীল গভীর তারপর মনে হল নেমে গেছি সেই পথে। এলোমেলো হাওয়া--ছুঁ য়ে আছি তোমাকে --এতদিন দেখা হয়নি বসন্ত কতবার দেখেছি। তোমাকে দেখিনি। অথচ সবসময় তোমাকেই খুজে ঁ ছি। তু মি কি বসন্ত ? ভরা যৌবনে অনভিজ্ঞ ডাগর চোখে কাজল দিয়ে সেদিন অপেক্ষায় ছিলাম সেদিন তোমায় দেখিনি! সেদিনও কি তু মি এত সুন্দর ছিলে? সেদিনও কি পারিজাতে বসন্ত নেমেছিল!!--২ রঙিন খামে

রঙিন খামেউড়ন্ত মন পুরে রাখি,

তোমাকে পাঠাবো বলে--রং লাগা খামের স্পর্শে আমি তোমার মুখ স্পষ্ট দেখি কি উজ্জ্বল! তোমার উচ্ছ্বাস আমার কাঁচের চু ড়ির ছটায় দৃপ্ত চু ড়ির ঠোকাঠু কি শব্দে কানায় কানায় তোমার চোখ জল টলটলে, একটা রঙিন খামে এত অনুভূতির ছিটে ! কম্পন লাগে কিংশুকে।।

হলুদ মাখা পাঞ্জাবি শিখা মালিক চৈত্রের বিকেলে হালকা হাওয়া বয়ে যায় তখন যখন আমি তোমার অপেক্ষায় । অনেক অপেক্ষা আমাকে বার বার চশমার কাঁচ মোছায়। তখন দেখি কিছু দূরে তু মি আসছো একটা হলুদ মাখা পাঞ্জাবি পরে। কত স্বপ্ন বোনা হচ্ছিল আমার কিশোরী মনে, বয়ে যাচ্ছে অনেক অনেক বাতাস । এমনি করেই বয়ে যায় কতদিন কত বছর আমি আজও চশমার কাঁচ মুছে নতু ন করে তাকাই। আজ হারিয়ে ফেলেছি স্বপ্ন বোনার মাকুটা, গাছের পাতারা আজ হলুদ মাখা পাঞ্জাবি হয়ে আমাকে প্রেম মাখাচ্ছে।

ফটিক চৌধুরী প্রেম-১ যে ঘরটা এতদিন বন্ধ ছিল প্রথমেই তার তালাটা খুলে দিই দরজাটা খুলতে ভয় করে হৃদয় হাট হয়ে খুলতে পারে ক'জন! তাই একটু একটু করে খুলি জানালা তাকিয়ে থাকে বিমর্ষ দৃষ্টিতে জানালা খুলতেই কী হাওয়া! সারা ঘরের বিষাক্ত হাওয়া মিশে গেল হাওয়ার অরণ্যে এবার শ্বাস প্রশ্বাস নিতে থাকি কোন ফাঁকে প্রেম এসে ঢু কে পড়ে এরপর থেকে হৃদয়ের ঘরে বাসা বাঁধে প্রেম। প্রেম-২ একটু মনোযোগ দিয়ে শোন দেখবে শ্রোতা হিসেবে তু মি

নিজেই কখন ডু বে গেছ। এই যে মনের যোগ এখান থেকেই মনে প্রেম আসে। সবকিছু তে নিষ্ঠা লাগে : প্রেমে ও অপ্রেমেও। আমাদের মহার্ঘ জীবনে

প্রেমও মহার্ঘ

জীবন একটি স্পঞ্জ তাতে জল দিলে শুষে নেয় জল এখানে প্রেম।

একটি ভালোবাসা --------------------শমিত কর্মকার তোমার চোখে ভালোবাসা ছিল বলে ভালোবেসে ফেলেছিলে, মায়াবি চোখ সেদিন আর অন্য কিছু ই দেখেনি। আজ ভালোবাসাটা অনেক পরিণত হয়েছে, ভালোবাসা আজ সাতপাকে বাঁধা পড়ে গেছে। ভালোবাসা এখন স্বাধীন হয়েছে অনেক কিছু বলার অধিকার, ভালোবাসা এখন প্রতি মুহূর্তে গবেষণা করছে। ভালোবাসা এখন পেতে চায় পূর্ণ তৃ প্তি , টাকা পয়সা ধন দৌলত ঐশ্বর্জ আরও আরও অনেক। তখনকার ভালোবাসা ছিল ভীষন পরাধীন, দুটি চোখ তখন শুধু ভালোবাসা কেই খুজে ঁ ছে। পরাধীন ভালোবাসা সেদিন শুধুই সংগ্ৰাম করে গেছে। স্বাধীন ভালোবাসা আজ বুঝেছে সেদিন আর এদিন এক নয়, তাহলে ভালোবাসার মৃত্যু ঘোটতো সংগ্ৰামের অনেক আগেই। তাহলে কি ভালোবাসা শুধুই কিছু খোঁজে? ******** শমিত কর্মকার।

সন্ধ্যা রায়ের কবিতা – ১ আক্ষেপ বৌদ্ধ বিহারের গুহায় পেলাম তোমায়। নীল আঁচল পেতে দিলাম, মনের সাজে কোন যৌনতা নেই। কোন অজুহাত নেই টু করো টু করো ভালবাসার। পৌরুষ জ্বর তোমার, তৃ ষ্ণার্ত , সুধা পানে তৃ প্ত তু মি, আমার শেষ আসক্তিটু কু তু মি। দিগন্ত রামধনুতে দেখি জীবনের শেষ দিন। শুধু আক্ষেপ থেকে যায় তাকে কিছু দিতে না পারায়। ২ অজানায় কোথায় হারিয়ে গেছ কোন অজানায়, শত শত যোজন দূরে তু মি আজ ,

কটা যুগ কেটে গেল দেখিনি তোমায়। ওই দ্বীপে আমি আসতে পারি যদি কথা দেও তু মি দেখা দেবে। প্রলয় সাগর আমি সাঁতরে হব পার অনায়াসে পাড়ি দেব বিশাল প্রাচীর, পার হব পাতাল পুরী, পার হব নাগ রাজ্য, তু মি বল দেখা দেবে ত আমায়? একরাশ ভালবাসা বুকে নিয়ে আসতে পারি লোক লজ্জা ঝেড়ে ফেলে বুকে নেবে ত আমায়? একবার আশ্বাস পেলে পাড়ি দেব অবলিলাক্রমে। এই যোজন দূর পাড়ি দেব ইশারায়। শুধু বল দেখা দেবে ত আমায়? কত কাল আমি দেখিনি তোমায়।

তাপসকিরণ রায়ের কবিতা–

প্রেমিকা আমার --তাপসকিরণ রায় আগুন তু মি নও জানি, তু মি স্নিগ্ধ, কুয়াশার মাঝেও তোমার গরিচয়টু কু তাই বুঝি হারিয়ে ফেলি নি। এই ভালো, হৃদয়ে তোমার ছবি, তাতে বিরহের চিহ্ন চিহ্ন… শুধু স্মৃতিতে সে ফু ল আরও লাল হয়ে ওঠে। পরিচয়হীন তু মি, তবু দূরত্ব সরে যায় অনায়াসে, না, কাছের নও তু মি, চাই না তোমায় কাছে পেতে, ছুঁ য়ে নেবার আগের মুহূর্ত গুলি কত অমায়িক তৃ ষ্ণা, তৃ ষ্ণা বলো? মুহূর্ত হলেও একটু না হয় হেসো, অঙ্গ সৌষ্ঠবে না হয় একবার মুগ্ধ করো আমায়। এক পেয়ালা চায়ের চু মুকে একবার না হয় আমায় মনে করো, বন্ধুপ্রেমিকা আমার ? জানি ছুঁ য়ে গেলে শরীর, নতু বা দূরত্বে বিরহ, তবু প্রেম নিভে যেতে দেব না, প্রেমিকা, আমার ! মনের মুগ্ধতায়, মনের আঙিনায় না হয় ফু টু ক রঙীন ফু ল। তোমার আয়ত চোখে চোখ রাখি, তোমার পলাশ ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াবো ভাবি।

ছুঁ য়ে দিলে নাকি কাম জন্ম নেয়, কামনায় প্রেমের ক্ষরণ জানি। শুধু স্মৃতিতে ছুঁ য়ে থাকার কামনা তোমায়, প্রেমীকা ! এ প্রেমে বিরহ নেই, এ প্রেমে কাম নেই, ছুঁ য়ে থাকার বাইরে, না ছুঁ য়ে, তোমায় বারবার ছুঁ বো। সমাপ্ত

Get in touch

Social

© Copyright 2013 - 2024 MYDOKUMENT.COM - All rights reserved.